
লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বছরের শ্রেষ্ঠ রাত। এই রাত হাজার বছরের চেয়ে উত্তম। রমজানের শেষ দশকের কোনো এক রাতে এই পবিত্র রজনী। নির্দিষ্ট করে লাইলাতুল কদর চিহ্নিত করা হয়নি। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২০১৭)
বিশুদ্ধ হাদিসে কদরের রাত চেনার বেশ কিছু আলামতের কথা এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি সা. বলেছেন, ‘…ওই রাতের আলামত বা লক্ষণ হলো, রাত শেষে সকালে সূর্য উদিত হবে তা উজ্জ্বল হবে। কিন্তু সে সময় (উদয়ের সময়) তার কোন তীব্র আলোকরশ্মি থাকবে না (অর্থাৎ দিনের তুলনায় কিছুটা নিষ্প্রভ হবে)। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৭০; ইসলামিক ফাউন্ডেশন : ১৬৫৫)
শবে কদরের বিশেষ ৬ ফজিলত তুলে ধরা হলো এখানে—
১. এ রাতে আল্লাহ তায়ালা পুরা কোরআন কারিমকে লাউহে মাহফুয থেকে প্রথম আসমানে নাজিল করেন। তাছাড়া অন্য আরেকটি মত আছে যে, এ রাতেই কোরআন নাযিল শুরু হয়। পরবর্তী ২৩ বছরে বিভিন্ন সূরা বা সূরার অংশবিশেষ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনা ও অবস্থার প্রেক্ষিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ হয়।
২. এই এক রজনীর ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম।
৩. এ রাতে পৃথিবীতে অসংখ্য ফেরেশতা নেমে আসেন এবং তারা সঙ্গে করে দুনিয়ার মানুষের জন্য কল্যাণ, বরকত ও রহমত নিয়ে আসেন।
৪. এই রাত শান্তি বর্ষণের রাত। এ রাতে ইবাদত গুজার বান্দাদেরকে ফেরেশতারা জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তির বাণী শুনায়।
৫. এ রাতের ফাজিলত বর্ণনা করে এ রাতেই একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাজিল হয়। যার নাম সূরা কদর।
৬. এ রাতে নফল সালাত আদায় করলে মুমিনদের অতীতের সগীরা গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
مَنْ قَامَ لَيْلَةُ الْقَدْرِ إِيْمَانًا وَّاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
অর্থ : যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াব লাভের আশায় কদরের রাতে নফল সালাত আদায় ও রাত জেগে ইবাদত করবে আল্লাহ তার ইতোপূর্বের সকল সগীরা (ছোট) গুনাহ ক্ষমা করেদেন। (বুখারি, হাদিস : ১৯০১; মুসলিম, হাদিস : ৭৬০)