শনিবার, ১০ মে, ২০২৫
০৩:১৪:২৮ AM
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
শিরোনামঃ

ইসরায়েলের তেল আবিবের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বেন গুরিয়নে ভয়ানক এক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতি। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যে বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। রোববার সকালে ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হঠাৎ করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা সাইরেন বেজে ওঠে। কিছুক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, ইয়েমেন থেকে ছোড়া বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে একটি তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের কাছেই আঘাত হেনেছে।

হামলার বেশ কয়েকটি ভিডিও ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানবন্দরের পাশে বিশাল একটি ধোঁয়ার কুণ্ডলী উপরের দিকে উঠছে, যা ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণের স্পষ্ট প্রমাণ পায়।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীও (আইডিএফ) নিশ্চিত করে জানান, বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এলাকায় আঘাত হানা ইয়েমেনি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। বিমান বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার এ ব্যর্থতার তদন্তও শুরু করেছে। দুই সেনা সদস্য নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। বর্তমানে নিরাপত্তা বাহিনী ও অনুসন্ধান দল ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করছে।

আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইয়েমেন যদি সত্যিই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলের অভ্যন্তরে আঘাত হানে, তাহলে তা এক নতুন সামরিক বাস্তবতার সূচনা করবে। ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন ‘আয়রন ডোম’, ‘ডেভিড’স স্লিং’ বা ‘অ্যারো’ প্রযুক্তি সাধারণত সাবসনিক বা সুপারসনিক গতির ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম। কিন্তু হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা এখনো অনেক দেশের জন্যই কঠিন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক ও সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সেখানে এমন একটি হামলা ইসরায়েলের জাতীয় মর্যাদা ও নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত। এই হামলা কেবল ইসরায়েলের ভেতরের নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়; এটি একটি বৃহৎ আঞ্চলিক সংকটের ইঙ্গিত, যেখানে ইয়েমেন, লেবানন, ইরানসহ একাধিক পক্ষ জড়িত হতে পারে। 

অন্যদিকে ইয়েমেনি হামলার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, মিসর এবং ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মধ্যেও উদ্বেগ ক্রমাগত বাড়ছে। কারণ, এটি মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অনিরাপদ ও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর, আরব সাগর, বাবেল মান্দেব প্রণালী ও এডেন উপসাগর দিয়ে চলাচলকারী ইসরায়েল ও এর মিত্র দেশগুলোর জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে হুতিরা। প্রায় ১৫ মাসের সংঘাতের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর হুতিরাও হামলা স্থগিত করে। তবে গত মাসে ইসরাইল নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করলে আবারও ইসরায়েল ও সাগরে পশ্চিমা জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে হুতিরা। 

হুতিদের এসব হামলার প্রতিক্রিয়ায় নিয়মিত তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে ইয়েমেনেও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। হুতি বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ইয়েমেনে ১ হাজার ২০০টিরও বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ হতাহত হয়েছেন এসব হামলায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts