
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি :
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত করতোয়া নদীতে হঠাৎ করে ভেসে উঠছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা, নদীর পানি কমে যাওয়া এবং শিল্পকারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য ও আবর্জনার কারণে পানির অক্সিজেন সংকট তৈরি হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয়দের ধারণা।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ভোর থেকে করতোয়া নদীর কালিতলা ঘাট থেকে করতোয়া ব্রিজ পর্যন্ত অংশে ছোট-বড় নানা প্রজাতির মাছ মৃত ও অচেতন অবস্থায় ভেসে উঠতে দেখা যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে নদীপাড়ে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। অনেকেই জাল, ঝাঁকি জাল কিংবা খালি হাতেই নদীতে নেমে মাছ সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
নদীতে মাছ ভেসে উঠতে দেখে হতাশা প্রকাশ করে মাছ সংগ্রহে আসা প্রিয়শ্রী তিথি বলেন, “এভাবে আগে কখনো মাছ ভেসে উঠতে দেখিনি। নদীর পানি কালচে হয়ে গেছে, গন্ধও আসছে। মনে হচ্ছে পানিতে বিষাক্ত কিছু মিশেছে।”
আরেক মাছ শিকারি রাতুল বলেন, “ভোর থেকেই মানুষ মাছ ধরছে। অনেক মাছ মরে গেছে, আবার কিছু আধা-মরা অবস্থায় ভাসছে। পানি স্বাভাবিক না, এতে নদীর পরিবেশের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নদীতে অপরিকল্পিতভাবে আবর্জনা ফেলা এবং বিভিন্ন ছোট-বড় কলকারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য নদীতে ছাড়ার কারণে করতোয়ার পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়েছে। এতে শুধু মাছ নয়, পুরো জলজ পরিবেশই হুমকির মুখে পড়েছে।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, “তীব্র শীতে নদীর তাপমাত্রা কমে যাওয়া, পানির প্রবাহ হ্রাস এবং বর্জ্য ও আবর্জনা মিশে পানির দূষণ বেড়ে যাওয়ায় নদীতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেছে। এ কারণেই মাছ মারা যাচ্ছে বা অচেতন অবস্থায় ভেসে উঠছে।”
এ সময় তিনি জনসাধারণকে সতর্ক করে বলেন, “নদী থেকে সংগ্রহ করা মৃত বা অচেতন মাছ খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই এসব মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।”