
আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) সংবাদদাতাঃ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে তীব্র সার সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ডিএপি সারের অভাব রয়েছে, যার ফলে কৃষকরা আলু ও সরিষা চাষে ভোগান্তিতে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কৃষকরা হতাশ এবং ক্ষুব্ধ, এবং স্থানীয় প্রশাসন এই সংকট নিরসনে কাজ করছেন কি তা এখনো পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে না।
অর্থনৈতিক চাপ আর আবহাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সার সংকট। সকল জমি প্রস্তুত না হলেও কিছু জমি প্রস্তুত তবে প্রয়োজনীয় সার না পেয়ে দিশেহারা কৃষকরা। স্থানীয় বাজারে ইউরিয়া, টিএসপি মজুদ থাকলেও ডিএপি (ড্যাপ)-সারেরই ঘাটতি বেশি।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পৌর শহরের কলেজ বাজারের নান্নুর সারের দোকানে দেখা মিলেছে কৃষকদের দীর্ঘ লাইন। বস্তা, ব্যাগ ও কারো হাতে রয়েছে জাতীয়পরিচয়পত্র। শুধুমাত্র সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষকদের সার প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে। কেউ কেউ দূর থেকেও এসে সার কেনার জন্য রয়েছে লম্বা লাইনে। কি পরিমান সার আসল কিংবা ডিলারের দোকান সার পৌঁছালো কিনা তা কৃষি অফিস খতিয়ে দেখে অনুমতি প্রদান করলে তবেই সার পাবে বলে জানিয়েছে ডিলার ও কৃষি অফিস।
সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষক মজনু হোসেন বলেন, সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি কিছু সার দিচ্ছে না, সারের দোকান দার বলছে কৃষি অফিস থেকে লোক এসে অনুমতি প্রদান করলে সার দেওয়া হবে। সার পাওয়ার আশায় সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। জানিনা কতটুকু সার পাবো তা দিয়ে পুরো জমিতে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে কি নাহ।
একই ভাবে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে থাকা আকরাম হোসেন, মিজানুর রহমান ও লোকমান হোসেন আক্ষেপ করে বলেন,, অন্যান্য জায়গায় ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে সার মজুত করছেন এবং বেশি দামে বিক্রি করছেন। এ জন্যই আমরা এসেছি সার নেওয়ার জন্য পরে যদি সার না পাই। বড় কৃষকেরা কোনোভাবে টিকে থাকলেও ক্ষুদ্র কৃষকরা চরম বিপাকে পড়বে।
সার ডিলার নান্নু বলেন এমাসে ৮২৬ বস্তা ডিএপি (ড্যাপ) সার শুধু সোনামুখী ইউনিয়নে দেওয়া হয়েছে এখনো যত লোক সার চাচ্ছে সঠিক মজুদ না থাকায় আর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতি বিঘায় ডিএপি (ড্যাপ) সার সরকারি হিসেবে ২৭ কেজি, সেখানে এক বস্তা করে যাচ্ছে এই যে ঘাটতি, আমারা জমি হিসাব করেই কিন্তু বরাদ্দ পাই। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি আপাদত অল্প করে সার ব্যবহার করুন এবং মাটি বেধে দেওয়ার সময় আবার সার দিন। উপজেলার প্রায় অনেকাংশ জমি এখনও প্রস্তুত না। কৃষকদের ভিতরে একটা অস্থিরতা কাজ করছে কোথাও কোথাও এখন ধান কাটা শেষ হলেও জমি প্রস্তুুত নয়। তবে তারা পরে সার পাবে কি নাহ এমনটা ভেবে সার নেওয়ার জন্য ছুটছে নিকটস্থ সার ডিলারদের কাছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ইমরান হোসেন বলেন, নভেম্বর মাসে ডিএপি (ড্যাপ) সারের জন্য মোট ৫৩৩ মে. টন বরাদ্দ থাকলেও ইতোমধ্যে বরাদ্দকৃত সব সার শেষ হয়ে গেছে। আমরা ডিসেম্বর মাসের ৩৭৭ মে. টন সার বরাদ্দ নিশ্চিত করেছি। ইতোমধ্যে আমরা সব সার ডিলারকে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। বরাদ্দপত্র পাওয়া মাত্রই ডিলাররা টাকা জমা দিলে ডিসেম্বরের ১ তারিখে পয়েন্টে সার মজুদ হবে।