
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার সিংসাড়া গ্রামে একটি পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় ওই পুকুরে বিষয় দেওয়া হয়। পুকুর মালিকের দাবি, বিষ প্রয়োগের ফলে তাঁর প্রায় ২৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে পুকুর দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা লোকজন পুকুরে মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখে পুকুর মালিক ডা. দেওয়ান মো. মেহেদী হাসানকে খবর দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, আত্রাই উপজেলার সিংসাড়া গ্রামের বাসিন্দা দেওয়ান মহসিন আলী মৎস্য হ্যাচারী গড়ে তোলে মাছের রেনু উৎপাদন ও বাণিজ্যিকভাবে মাছ করে আসছিলেন। গুণগতমানের রেনু উৎপাদনে বিশেষ অবদান রাখায় ২০০৯ সালে মহসিন আলীর হ্যাচারী জাতীয় মৎস্য পদক পায়। বর্তমানে তাঁর ছেলে দেওয়ান মেহেদী হাসান হ্যাচারীটির দেখাশোনা করেন।
দেওয়ান মেহেদী হাসান বলেন, তাঁদের হ্যাচ্যারিটিতে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি পুকুর আছে। ছোট পুকুরগুলোতে মাছের রেণু উৎপাদন করা হয়। আর পুকুরগুলোতে পোনা ছেড়ে মাছ বড় করে বিক্রি করা হয়। যে পুকুরটিতে বিষ দেওয়া হয়েছে সেটির আয়তন ১৩-১৪ বিঘার মতো। পুকুরটিতে বড় মাছ ছিল। পুকুরটিতে ধাপে ধাপে ১৫ লাখ টাকার মাছ পোনা ছাড়া ছিলো।
এছাড়া ছয়-সাত মাস ধরে মাছের খাবার ও শ্রমিক খরচ বাবদ আরও ৯-১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। মাছগুলো বিক্রির উপযুক্ত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আজ সকালে খবর পাই যে পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠছে। প্রথমে মনে হয়েছিল হয়তো পুকুরে গ্যাসের কারণে মাছ মরে ভেসে উঠছে। কিন্তু পরে পুকুরের ধারে বিষের বোতল খুঁজে পাওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছে, মাছ মেরে ফেলার জন্য কে বা কারা রাতের বেলা পুকুরে বিষ দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখে গ্রামের লোকজন অনেকেই মরা মাছ ধরে নিয়ে গেছেন। এছাড়া কিছু মাছ মরার আগেই জাল টেনে তুলে বাজারে আড়তে বিক্রি করা হয়। তবে বিষ দেওয়া পুকুরের মাছ হওয়ায় পানির দরে ২০-৩০ টাকা কেজি দরে মাছগুলো বিক্রি করতে হয়েছে। ভালো মাছ বিক্রি করে যেখানে ২৪-২৫ লাখ টাকা পাওয়া যেত, সেখানে মাত্র ৩ লাখ টাকার মতো মাছ বিক্রি হয়েছে।
মেহেদী হাসান বলেন, ‘পুকুরে কারা বিষ দিতে পারে তা প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে না। আমাদের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। তবে এ ব্যাপারে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করব। আশা করি, পুলিশ তদন্ত করে যাঁরা দোষী তাঁদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনবে।’
এ ব্যাপারে আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। তবে এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।