
পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
পত্নীতলার শিহাড়া ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে সার সংকট নিয়ে কৃষকদের অভিযোগ যখন চরমে, ঠিক সেই সময় ইউনিয়নে বড় ধরনের অসঙ্গতি ও অনিয়মের ঘটনা সামনে এসেছে। বুধবার বিকালে এ ঘটনাটি এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিহাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি বিএনপি নেতা সিরাজ আর্মির বাজারে চোরাই বা অবৈধভাবে মজুদ করা প্রায় ৩০০ বস্তা সার পাওয়া যায়। সার সংকটের এই সময়ে এত বিপুল পরিমাণ সার মজুদ রাখার খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে কৃষি অফিসার সোহরাব আলী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবৈধভাবে মজুদ করা সারের মধ্যে ১০০ বস্তা সার উদ্ধার করেন। তিনি সারগুলো পাটলের গোয়েন্দা পাড়ার একটি বাগানের ভেতর থেকে উদ্ধার করে নিজের তত্ত্বাবধানে নিয়ে যান। উদ্ধারকৃত সারগুলো আপাতত কৃষি অফিসারের হেফাজতে রয়েছে।
কৃষি অফিসার সোহরাব আলী বলেন- আমি প্রাথমিকভাবে ১০০ বস্তা সার উদ্ধার করেছি। বাকি ২০০ বস্তা সার এখনও ওই ব্যক্তির গুদামেই রয়েছে। বিষয়টি নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
উদ্ধার হওয়া সারের মধ্যে ছিল
২০০ বস্তা বিআরডিসির (BADC) সরকারি সার
১০০ বস্তা বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডের সার, যা সাধারণত কৃষকদের নিয়মিত বরাদ্দ হিসেবে সরবরাহ করা হয়
পাইকবান্ধা গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম ও ওমর
ফারুক অভিযোগ করে বলেন- আমরা দিনের পর দিন সার না পেয়ে ধান ও সবজি চাষে ক্ষতির মুখে পড়ছি। অথচ রাজনৈতিক পরিচয়ের আশ্রয়ে কেউ যদি ৩০০ বস্তা সার মজুদ করে রাখে—এটা কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন।
স্থানীয় কৃষক, ভুক্তভোগী ও সচেতন নাগরিকরা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তাদের দাবি- ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত সত্য প্রকাশ মজুদদার ও সংশ্লিষ্ট চক্রকে আইনের আওতায় আনা, উদ্ধারকৃত সার দ্রুত প্রকৃত কৃষকদের মাঝে বিতরণ, ভবিষ্যতে এ ধরনের সার সিন্ডিকেট দমনে কঠোর নজরদারি করতে হবে।
এ ঘটনায় পুরো শিহাড়া ইউনিয়নজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে। স্থানীয় জনমনে এখন একটাই দাবি—
সার মজুদকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।