
সাগর মিয়া, রংপুরঃ
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন ছাড়া দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন রংপুর-২ (বদরগঞ্জ–তারাগঞ্জ) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও দলের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে বদরগঞ্জ পৌরসভার সাহাপুর মাঠ থেকে শুরু হওয়া বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা ও প্রচারণা সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সকাল থেকেই সাহাপুর মাঠে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় জমতে থাকে। পরে প্রায় দুই হাজার মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা বদরগঞ্জ থেকে এরশাদ ব্রিজ, শ্যামপুর, নাগেরহাট, পদাগঞ্জ, লোহানীপাড়া, ওসমানপুর, ট্যাক্সেরহাট, গোপীনাথপুর, লালদীঘি, মাদারগঞ্জ, তারাগঞ্জ, ধোলাইঘাট, একরচালি, হাড়িয়ালকুটি, শেখেরহাট ও চেংমারী ঘুরে আবার সাহাপুর মাঠে ফিরে আসে। শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “সব রাজনৈতিক দল গণভোটে সম্মত হলেও জাতীয় নির্বাচনের আগে কেন গণভোট হবে না—তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই। গণভোট ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা ফেরানোর কোনো বিকল্প পথ নেই।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করা সম্ভব নয়, তাই নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজন করা জরুরি।
দীর্ঘ সাড়ে চার মাসের গণসংযোগের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বদরগঞ্জ একটি প্রত্যন্ত এলাকা হলেও নারী, তরুণসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। বিজয় ইনশাআল্লাহ নিশ্চিত।” তরুণ প্রজন্মের সমর্থন তার পক্ষে অসাধারণভাবে দৃশ্যমান বলে তিনি দাবি করেন।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয় প্রশাসনের একটি অংশ বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করছে। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে রংপুর-২ আসনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা সম্ভব।” প্রচারণায় নিজের উন্নয়ন পরিকল্পনাও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “অনেক রাস্তা এখনও নির্মাণ হয়নি—নির্বাচিত হলে এসব সড়ক নির্মাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অবহেলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। বৈষম্য দূর হবে।” তিনি জানান, আইনগত বাধা না থাকলে বন্ধ থাকা বদরগঞ্জ সুগার মিল পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে কয়েকশ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। পাশাপাশি দুই উপজেলায় আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
সরকারি অর্থ ব্যবহারে নৈতিকতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “ক্ষমতায় গেলে সরকারি বরাদ্দের একটি হারামের টাকাও আমি গ্রহণ করব না, ইনশাআল্লাহ।”
নিজের বিজয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমার বিজয়ের ধারে কাছে কেউ আসতেও পারবে না। জনগণের প্রবল সমর্থন এবার বদরগঞ্জ–তারাগঞ্জে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”