
ডেস্ক রিপোর্টঃ
শরীরের একটি সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হলো চুলকানি। অনেকেই এটিকে অ্যালার্জি বা সাধারণ চর্মরোগ ভেবে উপেক্ষা করেন। তবে চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা চুলকানি লিভার, কিডনি কিংবা রক্তের মারাত্মক রোগের প্রাথমিক সতর্কসংকেত হতে পারে।
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান বলেন, লিভারের দীর্ঘমেয়াদী রোগে শরীরে পিত্তরস ও পিত্ত অ্যাসিড জমে যায়। এই জমে থাকা পিত্ত উপাদান ত্বকের স্নায়ুকে উত্তেজিত করে, যার ফলে বিশেষ করে রাতে তীব্র চুলকানি দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে ত্বকে কোনো দৃশ্যমান র্যাশ বা দাগ না থাকলেও রোগী অসহ্য চুলকানিতে ভোগেন।
তিনি আরও জানান, কিডনি বিকল রোগী বা যাঁরা নিয়মিত ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন, তাঁদের শরীরজুড়ে চুলকানি একটি সাধারণ কিন্তু কষ্টদায়ক সমস্যা। এই চুলকানি রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং রোগীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে।
চুলকানি রক্তের বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হতে পারে। আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তশূন্যতা, লোহিত রক্তকণিকা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া (পলিসাইথেমিয়া) কিংবা রক্তের ক্যানসারের প্রাথমিক পর্যায়েও সারা শরীরে চুলকানি দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে গরম পানিতে গোসলের পর চুলকানি বেড়ে যাওয়া রক্তের নির্দিষ্ট কিছু রোগের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হয়।
এছাড়া ডায়াবেটিস ও থাইরয়েডের সমস্যায় ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে চুলকানি তৈরি করতে পারে। গর্ভাবস্থায় অনেক নারীর শরীরে পিত্তরস জমে গিয়ে হাত ও পায়ের তালুতে তীব্র চুলকানি দেখা দেয়। পাশাপাশি কৃমি ও বিভিন্ন পরজীবীর সংক্রমণও চুলকানির অন্যতম কারণ।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, যদি ত্বকে কোনো দৃশ্যমান সমস্যা ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে সারা শরীরে চুলকানি থাকে এবং এর সঙ্গে ওজন কমে যাওয়া, জন্ডিস, রক্তশূন্যতা বা অতিরিক্ত দুর্বলতার মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে তা কোনো জটিল অভ্যন্তরীণ রোগের ইঙ্গিত হতে পারে।
এ কারণে চুলকানিকে শুধুমাত্র সাধারণ চর্মরোগ ভেবে অবহেলা না করে, দ্রুত এর মূল কারণ নির্ণয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।