
ডেস্ক রিপোর্ট :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা ঘিরে রাজধানীতে নেওয়া হয়েছে ছয় স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং গুলশানের ফিরোজা ভবন পর্যন্ত পুরো যাত্রাপথে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক বাহিনী ও সংস্থাকে মোতায়েন করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও আনসার সমন্বিতভাবে এই নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে। বিমানবন্দরের ‘ইয়োলো জোন’ থেকে শুরু করে প্রায় ১২ ঘণ্টা তারেক রহমানের চারপাশে ছায়ার মতো থাকবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
ডিএমপি সদর দপ্তরে কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাধিক বিশেষ সমন্বয় সভায় সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এভারকেয়ার হাসপাতাল, বিমানবন্দর ও ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় সব ধরনের ড্রোন উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানান, তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে কনভয় এবং যাত্রাপথজুড়ে অন্তত দেড়শ থেকে দুইশ সাদা পোশাকের ডিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
একাধিক সূত্র জানায়, চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ), সেনাবাহিনীর ৪৬ ব্রিগেড, মিরপুর সেনানিবাসের এয়ার ডিফেন্স ইউনিট, সব গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম, র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং ও বিজিবির চৌকস দল ইতোমধ্যে বিমানবন্দর, এভারকেয়ার হাসপাতাল ও গুলশান এলাকা বিশেষ নজরদারিতে রেখেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে কয়েকটি সুউচ্চ ভবনের ছাদেও অবস্থান নিয়েছেন বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা।
এদিকে তারেক রহমানকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য তিনশ’ ফিট রোডে স্থাপিত মঞ্চের অবস্থান সাতবার পরিবর্তন করা হয়েছে। সম্ভাব্য স্নাইপার ও গ্রেনেড হামলার ঝুঁকি বিবেচনায় মঞ্চের চারপাশে বুলেটপ্রুফ কাচ স্থাপন করা হয়েছে। সড়ক থেকে মঞ্চের মোট উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুট রাখা হয়েছে।
নিরাপত্তার অংশ হিসেবে লন্ডন-ঢাকা রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট থেকে দুই কেবিন ক্রুকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারিভাবে নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি দলীয়ভাবেও ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। বিমানবন্দরের রেড জোনে কেবল দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরাই তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানাতে পারবেন এবং এ জন্য আলাদা নিরাপত্তা পাস দেওয়া হবে।
ডিএমপি কমিশনার স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ২৪ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তারেক রহমানের যাতায়াতের পুরো এলাকায় অনুমোদনহীন ড্রোন উড্ডয়ন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।