শাহজাদপুর থেকে নাজমুল হক:
শাহজাদপুর উপজেলার ২০টি গ্রাম নদীভাঙনের কবলে পড়েছে। আগে এই গ্রামগুলো ছিল কৃষিপ্রধান। মনাকোষা, কৈজুরী, গুপিয়াখালি, লহিনদাকানধি, গুধিবাড়ি, ভাটপাড়া, জগতলা, বারোপাখিয়া, ধীতপুর, কুরশি, গোপালপুর, হাতকোড়া, খারুয়া, মৌকুড়ি, চানতারা, বাঙগালা, ধলাই, বিনোটিয়া, চিতুলিয়া ও পায়খনদো- এগুলোতে একসময় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস ছিল।
গ্রামগুলোতে ধান, পাট, গম, সরিষা, রাই, তিল, তিসি, মাশকালাই, খেসারী এই ফসলগুলোই কৃষকের জীবিকার মূল উৎস। ফসল ঘরে আসার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকের মুখে হাসি ফুটত; বিক্রি করে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, বিয়ে ও সংসারের খরচ পূরণ হতো। বারো মাসের পরিশ্রমই চলত ফসল বোনা, পরিচর্যা, কাটা ও তোলা নিয়ে।
এই ভাঙনগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে জগতলা গ্রাম ছিল সবচেয়ে বড় ও কৃষি উৎপাদনে সেরা। এ গ্রামের বড় গৃহস্থরা ছিলেন হযরত মণ্ডল, নূরুল হক সর্দার, হাচেন উদ্দিন, নুর মোহাম্মদ, জিনতু বেপারী, হযরত আলী, সন্তোষ মোল্লা। কেউ ৬০–৭০ বিঘা জমির মালিক ছিলেন। তখন তারা সম্পন্ন পরিবারে গননা হতেন।
কিন্তু এখন, যমুনার স্রোতে জোতজমি, বসতভিটা সব বিলীন। পরিবারগুলো ধার দেনায় জর্জরিত। নদীর ওপারে চর জেগেছে, কিন্তু সেখানে শুধু ধুধু বালু। নতুন প্রজন্মের কাছে এই গ্রামগুলো এখন শুধু রূপকথার গল্পের মতো মনে হয়।
জগতলার সমাজসেবক হাজী মনোয়ারুল হক বলেন, নদীভাঙন পীড়িত এই এলাকায় বিশেষ অর্থ বরাদ্দ এবং কর্মসংস্থান তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি, যেন এখানকার মানুষ আবার স্বাবলম্বী হয়ে দাঁড়াতে পারে।


