ডেস্ক রিপোর্টঃ
নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে সড়ক অবরোধ, দীর্ঘ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে উপজেলার নওগাঁ–রাজশাহী মহাসড়কের ফেরিঘাট এলাকায় এ কর্মসূচি আয়োজন করে এক পক্ষের কর্মী ও সমর্থকেরা।
নওগাঁ-৪ আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল বারী টিপুর নাম ঘোষণা করেছে দলটি। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও মান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মতিন। তিনি ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক আহবায়ক ছিলেন।
এম এ মতিনের সমর্থকেরা বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী ফেরিঘাট সেতু থেকে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মহাসড়কের এক পাশে দাঁড়িয়ে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এ কর্মসূচিতে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে আসা কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
তাঁদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও এতে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে ফেরিঘাট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। বিকেল পৌনে ৪টা থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এম এ মতিনের অনুসারীরা। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে প্রায় ৪৫ মিনিট পর বিক্ষোভকারীরা সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, উপজেলার ভালাইন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, পরানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শহীদ, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, কসব ইউনিয়নের সভাপতি আবুল হাশেম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে নওগাঁ-৪ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিতর্কিত ব্যক্তি ইকরামুল বারী টিপুর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে ইকরামুল বারী আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে আঁতাত করে চলেছেন। কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি মাঠে ছিলেন না। আওয়ামী লীগের সময়ে হরতালসহ বিভিন্ন আন্দোলনে এম এ মতিনের নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা মাঠে ছিলেন। তাঁরা নওগাঁ-৪ আসনে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে এম এ মতিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানান।
ভালাইন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, মান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মতিন ত্যাগী, পরীক্ষিত ও বারবার কারানির্যাতিত নেতা। তার নেতৃত্বেই মান্দা বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। অথচ তৃণমূলের মতামত অগ্রাহ্য করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে। এম এ মতিনকে প্রার্থী ঘোষণা না করা হলে তৃণমূল বিএনপি বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে, প্রয়োজনে গোটা মান্দা অচল করে দেওয়া হবে।
বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগবিরোধী সব আন্দোলনে যাঁরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন, তাঁরা সবাই এম এ মতিনের পক্ষে–বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হোক—এটি শুধু বিএনপির নেতা–কর্মীদের চাওয়া নয়, উপজেলার সব মানুষের চাওয়া। তাই এখানে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য দলের কাছে আহ্বান জানাতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া ইকরামুল বারী টিপু বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’
মনোনয়নবঞ্চিত এম এ মতিন বলেন, ‘সব আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। দুর্দিনে তৃণমূল নেতাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। আমরা কেউ দলের ঊর্ধ্বে নই, দলের জন্য কাজ করছি। পুনর্বিবেচনা হলে মনোনয়ন পেতে পারি। দলই সবার আগে।’


