নওগাঁ পৌরসভার বোয়ালিয়া এলাকায় জামায়াতের মহিলা সমাবেশ পণ্ড করা এবং চাঁদাবাজির অভিযোগে নওগাঁ সদর উপজেলা জিয়া সাইবার ফোর্সের সদস্য সাব্বির রহমানসহ (পাপ্পু) অজ্ঞাত চার-পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নওগাঁ সদর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
মামলার বাদী জামায়াতে ইসলামী নওগাঁ সদর উপজেলা শাখার কর্মপরিষদ সদস্য ওহেদুল ইসলাম। মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামী নওগাঁ পৌর মহিলা বিভাগের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পৌরসভার বোয়ালিয়া সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে নির্বাচনী মহিলা সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী নওগাঁ জেলা শাখার সেক্রেটারি ও নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. আ স ম সায়েম।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের প্রস্তৃতি চলছে এমন সময়ে বোয়ালিয়া সরদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাব্বির রহমান পাপ্পু অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ করার জন্য জামায়াতের নওগাঁ পৌর মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি মমতাজ আক্তারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মাঠে সমাবেশ করতে দেবে না বলে হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
তাঁরা চলে যাওয়ার পর সমাবেশ শুরু হয়। বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে প্রধান অতিথি আ স ম সায়েম বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে সাব্বির রহমান লোকজন নিয়ে আবারও সেখানে হাজির হয় এবং চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আ স ম সায়েমকে ধাক্কা দেয় এবং গালিগালাজ করতে থাকে।
এরপর তাঁরা সমাবেশস্থলে থাকা চেয়ার-টেবিল ছুঁড়ে ফেলে এবং ভাঙচুর করে। এ সময় আ স ম সায়েম মুঠোফোনের ক্যামেরায় ভিডিও ধারন করতে চাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ফোনটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জামায়াত নওগাঁ পৌর মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি মমতাজ আক্তার বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে বোয়ালিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের প্রস্তুতি চলাকালে বোয়ালিয়া সরদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাব্বির রহমান পাপ্পু সেখানে উপস্থিত হয়ে আমাকে বলেন, তাঁকে নগদ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। চাঁদার টাকা না দিলে কোনো সমাবেশ করতে দেব না। তাঁর কথামতো টাকা না দেওয়ায় সমাবেশ পণ্ড করে দেয় এবং জামায়াতের এমপি প্রার্থী সায়েম ভাইকে হেনস্থা করে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ সদর উপজেলা জামায়াতের আমির আব্দুর রহিম বলেন, ‘রাষ্ট্রের আইন মেনে সমাবেশ করা নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার। মঙ্গলবার বিকেলে জামায়াতের মহিলা কর্মীদের একটা সমাবেশ ছিল। সেই সমাবেশ পণ্ড করা হয়েছে এবং আমাদের দলের এমপি প্রার্থী আ স ম সায়েমকে হেনস্থা করা হয়েছে। এটা খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এই ঘটনার বিচার দাবিতে দলীয় সিদ্ধান্তে নওগাঁ সদর থানায় মঙ্গলবার রাতে একটি মামলা করা হয়েছে। আসামিদের আমরা দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করছি।’


