সাগর মিয়া, রংপুরঃ
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার ৩নং কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক শৈথিল্য ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো, হত্যা ও নাশকতাসহ একাধিক ফৌজদারি মামলার আসামি হয়েও তিনি এখনো চেয়ারম্যান পদে বহাল রয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আব্দুল মজিদের বিরুদ্ধে মামলা নং ৩৮/২০২৩ (দফা ৪৩/৩৪১/৩০২/১১৪/৩৪) এবং মামলা নং ১৭/২৪ ( দফা ৪৩/১৪৭/৩২৬/৩০৭/১১৪) আদালতে চলমান রয়েছে। এসব মামলায় তিনি একাধিকবার কারাবন্দিও ছিলেন। এছাড়া তিনি টানা তিনটি উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় অনুপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী—টানা তিন সভায় চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকলে কার্যত প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেয়ার কথা। কিন্তু কারামুক্তির পর তিনি আবার জোরপূর্বক প্রশাসনিক দায়িত্ব দখল করে নেন বলেও অভিযোগ আছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য—চেয়ারম্যান মজিদ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার নির্দেশনা ও অর্থায়ন করেছেন। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন নাশকতামূলক ঘটনাও ঘটেছে বলে কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ সচিবের বিরুদ্ধেও উঠেছে গুরুতর অভিযোগ—তিনি নাকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-এর কাছে সভা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করেছেন এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য পাঠিয়েছেন। একটি ভিডিও ফুটেজে বিষয়টি নিয়ে সচিবকে কথা বলতে শোনা গেছে বলেও দাবি করেছে স্থানীয় সূত্র।
কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন “সচিব যেভাবে আমাদের চিঠি দিয়েছেন, আমরা তা দেখে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছি। কারো পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আসেনি। তবে অভিযোগ এলে আমরা তদন্ত করব।”
অন্যদিকে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন—“আমি শুধু দুইটি মিটিংয়ে অনুপস্থিত ছিলাম। সচিব যদি অন্য কিছু বলে থাকে—তা হলে সে প্রমাণ দিক।” প্রশাসনের দীর্ঘ নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে স্থানীয় জনমনে প্রশ্ন একাধিক মামলা, আইন লঙ্ঘন ও প্রশাসনিক অনিয়ম থাকা সত্ত্বেও কেন এখনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? উল্লেখ্য, চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ এক সময় রংপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ছিলেন।


