
ভারত–পাকিস্তান পানি-বিতর্কে এবার সরাসরি মুখ খুললেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ও রাজনীতিক মিঠুন চক্রবর্তী। তীব্র কটাক্ষে প্রাক্তন পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে উদ্দেশ করে তিনি রসিকতার সুরে বললেন— “ভারত প্রস্রাব করলেই পাকিস্তান ডুবে যাবে।”
বাঁধ আর ‘সুনামি’র হুঁশিয়ারি
মঙ্গলবার দেওয়া এক মন্তব্যে মিঠুন বলেন, “একবার যদি আমাদের ভারতীয়দের মাথা গরম হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু মুশকিল হবে! হতেই পারে এমন এক বাঁধ বানাব, যেখানে ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ প্রস্রাব করবে। তারপর সেই বাঁধ খুলে দিলেই হবে সুনামি!”
তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের প্রতি তাঁর কোনো বিরূপ মনোভাব নেই। এই বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে বিলাওয়ালের উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।
পানি-বিতর্কে উত্তেজনা
সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ইন্দাস পানিচুক্তি নিয়ে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কয়েক দিন আগে সিন্ধ প্রদেশের সংস্কৃতি দপ্তরের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিলাওয়াল ভুট্টো অভিযোগ করেন, ইন্দাস নদীর পানি প্রবাহে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যা পাকিস্তানের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ওপর সরাসরি আঘাত। তিনি একে সিন্ধ প্রদেশের অস্তিত্বের জন্যও হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেন।
বিলাওয়ালের দাবি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইন্দাস নদীর জলপ্রকল্প পাকিস্তানের জলনিরাপত্তা বিপন্ন করছে। তিনি এটিকে সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘর্ষে ভারতের “পরাজয়ের প্রতিক্রিয়া” হিসেবেও তুলে ধরেন।
যুদ্ধের হুমকি নতুন নয়
এটাই প্রথমবার নয় যে বিলাওয়াল পানি ইস্যুতে যুদ্ধের হুমকি দিলেন। চলতি বছরের জুনে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা করেছিলেন— যদি পাকিস্তানকে ইন্দাস নদীর পানি থেকে বঞ্চিত করা হয়, তবে তারা “যুদ্ধেও যেতে প্রস্তুত”।
ভারতের অবস্থান
কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় নিহত হওয়ার পর চলতি বছরের এপ্রিলেই ভারত ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দাস পানিচুক্তি স্থগিত করে দেয়। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তখন স্পষ্ট জানিয়ে দেন— “এই চুক্তি আর ফিরিয়ে আনা হবে না।”
পানি ইস্যুর গুরুত্ব
বিশ্লেষকদের মতে, ইন্দাস পানিচুক্তি স্থগিত হয়ে গেলে পাকিস্তানের কৃষি ও পানির সরবরাহে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে ভারত এটিকে কৌশলগত চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এই প্রেক্ষাপটে মিঠুন চক্রবর্তীর মন্তব্যে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।