
শোবিজে মডেল হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন এডলফ খান। পরে তিনি টিভি ও চলচ্চিত্রে স্টাইলিশ ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেন এবং সম্প্রতি ‘সেরা স্টাইলিশ ফ্যাশন ডিরেক্টর’ হিসেবে একটি পুরস্কার অর্জন করেন। কিন্তু এই খবর বিকৃতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যে, তিনি নাকি “দেশের সেরা সুদর্শন পুরুষের পুরস্কার” পেয়েছেন। এরপর থেকেই শুরু হয় ব্যাপক ট্রল ও সাইবার বুলিং।
এডলফ খান বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি কখনোই বলিনি আমি দেশের সবচেয়ে সুদর্শন। আমি আল্লাহ প্রদত্ত মেধা, জ্ঞান-বুদ্ধি, সরলতা ও উদারতা নিয়ে বাঁচতে চাই। আমাকে নিয়ে তর্ক করার আগে ভেবে দেখুন, আমি কি এমন দাবি করতে পারি?”
তবে বাবার মৃত্যুর পরও ট্রল থেকে রেহাই পাননি তিনি। বাবার জানাজাতেও তার পোশাক নিয়ে অনেকে কটূক্তি করেছেন। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, “এমন সন্তান জন্মের পর বাবার আত্মহত্যা করা উচিত ছিল।”
এ প্রসঙ্গ নিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবেগঘন একটি পোস্ট দেন বাংলাদেশের প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের কূটনীতিক ওয়ালিদ ইসলাম।
তিনি লেখেন, “আমরা জন্মের পর থেকেই আপনাদের সমাজের হাসির খোরাক। এডলফ খান বা নাহিদ—ওদের মেয়েলি আচরণের জন্য কাকে দায়ী করবেন? দায় যদি থাকে তা কেবল সৃষ্টিকর্তার। আল্লাহ-ই শরীরে হরমোনাল ইমব্যালান্স দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। বাবা মারা যাবার পরও কারো বাবাকে গালাগালি করা কি মানবতা?”
ওয়ালিদ আরও লিখেছেন, “নাহিদ নামের ছেলেটি শুধু রান্নার ভিডিও বানায়। অথচ তার নিচে মন্তব্য আসে—‘এই হিজড়াটা হিজড়াদের ডেরায় যায় না কেন?’ আল্লাহ আমাদের মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আপনারা মানুষ ভাবেন বা না ভাবেন, আল্লাহ কিন্তু মানুষ হিসেবেই আমাদের দেখেন।”
সবশেষে তিনি আহ্বান জানান, “আপনার সন্তানের জন্য দোয়া করি, আল্লাহ যেন কখনো তাকে আমাদের মতো জন্ম না দেন। কারণ আমাদের যন্ত্রণা, আমাদের কান্না শুধু আমরাই জানি।”