পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একটি পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ৭ জন পুলিশ সদস্য নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে ডেরা ইসমাইল খান জেলায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সন্ত্রাস দমন বিভাগ (সিটিডি) হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীরা শুক্রবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে শোরকোট থানার সীমানার মধ্যে অবস্থিত পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হঠাৎ হামলা চালায়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হামলাটি ছিল একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সন্ত্রাসীরা প্রথমে বিস্ফোরক বোঝাই একটি ট্রাক কেন্দ্রের মূল গেটে ঢুকিয়ে দেয়। প্রবল বিস্ফোরণে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দেয়াল ধসে পড়ে এবং তৎক্ষণাৎ সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ শুরু করে।
ডেরা ইসমাইল খান পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের পাল্টা হামলায় পাঁচজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। টানা পাঁচ ঘণ্টা ধরে গুলিবিনিময় চলে। পুলিশের দাবি, হামলাকারীরা ‘ফিতনা আল খাওয়ারিজ’ নামের গোষ্ঠীর সদস্য, যা নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর একটি শাখা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামলার সময় সন্ত্রাসীরা কাছের একটি সরকারি ভবন জাতীয় ডাটাবেস ও নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের (নাদ্রা) কার্যালয়েও আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে স্থানীয় প্রশাসন জানায়।
সিটিডির প্রাথমিক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে, ঘটনাস্থলেই ৭ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত ১৩ জনের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের উদ্ধার করে ডেরা ইসমাইল খান জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সহকারী কমিশনার মুহাম্মদ হামিদ সিদ্দিকী হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “এটি ছিল একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা। নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে নেয়, না হলে হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতো।”
পাকিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, “সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের এই মুহূর্তে পুলিশের ওপর এমন হামলা কাপুরুষোচিত। নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে।”
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীও নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, “যারা জাতির নিরাপত্তার জন্য জীবন দিয়েছেন, তারা আমাদের গর্ব। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।”


