জাতিসংঘে দুই-রাষ্ট্র সমাধান ঘোষণায় ব্যাপক সমর্থন, হামাসেরও নিন্দা

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ঘোষণাটিকে সমর্থন জানিয়ে আনা একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৪২টি, বিপক্ষে মাত্র ১০টি। ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে অভাবনীয় সমর্থন পেল জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত একটি ঘোষণা। এতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য “বাস্তব, নির্দিষ্ট সময়সীমাবদ্ধ ও অপরিবর্তনীয় পদক্ষেপ” নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত ভোটে ১৪২টি দেশ ঘোষণার পক্ষে অবস্থান নেয়। মাত্র ১০টি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়, আর ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।

পটভূমি

গত জুলাইয়ে সৌদি আরব ও ফ্রান্সের উদ্যোগে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ভিত্তিতেই ৭ পৃষ্ঠার এ ঘোষণা প্রণয়ন করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সেই সম্মেলন বয়কট করেছিল।

আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের সাইডলাইনে বিশ্বনেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ব্রিটেন ও ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘোষণার মূল বিষয়

ঘোষণায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে সরাসরি নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে বেসামরিক হতাহতের ঘটনা, অবরোধ আরোপ ও খাদ্যসংকট তৈরিরও সমালোচনা করা হয়েছে।

ঘোষণায় বলা হয়, এসব কারণে গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ও নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয় এবং সেখানে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশন পাঠানোর প্রস্তাবও অনুমোদন পায়।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো এক্সে দেওয়া বার্তায় বলেন—
“প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে এমন একটি প্রস্তাব গৃহীত হলো, যেখানে হামাসকে তাদের অপরাধের জন্য নিন্দা এবং অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে।”

সব উপসাগরীয় আরব দেশ ঘোষণার পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তাদের সঙ্গে ছিল আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, মাইক্রোনেশিয়া, নাউরু, পালাউ, পাপুয়া নিউ গিনি, প্যারাগুয়ে ও টোঙ্গা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি মরগান অরটাগাস বলেন—
“এটি শান্তির পথে একটি ভুল পদক্ষেপ, বরং হামাসকে শক্তিশালী করছে এবং সংঘাত দীর্ঘায়িত করছে।”

অন্যদিকে, ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন প্রস্তাবটিকে ‘একতরফা ও নাটকীয়’ বলে অভিহিত করেন। তার ভাষায়—
“এ ধরনের পদক্ষেপ সন্ত্রাসকে উসকে দিচ্ছে, শান্তিকে নয়।”

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp