দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে আগামী ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। চলতি পর্যটন মৌসুম চলবে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। তবে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার কঠোরভাবে ১২টি নির্দেশনা জারি করেছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫’-এর আলোকে প্রণীত “সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩” অনুসারে এসব বিধান কার্যকর করা হবে।
নির্দেশনাগুলো হলো—
>> বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্টমার্টিনে চলাচল করতে পারবে না।
>> পর্যটকদের অনলাইনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে টিকিট কিনতে হবে, যেখানে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে।
>>ভ্রমণের সময়সূচি ও পর্যটক সংখ্যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
>> নভেম্বর মাসে কেবল দিনের বেলায় ভ্রমণ করা যাবে, রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ।
>> ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে।
>> ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
>> প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক প্রবেশ করতে পারবেন।
>>রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ করা বা বারবিকিউ পার্টি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
>> কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া ও শামুক-ঝিনুকের ক্ষতি করা যাবে না।
>> সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ কোনো মোটরচালিত যান চলাচল নিষিদ্ধ।
>> নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না; একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
>> পর্যটকদের প্লাস্টিক বোতলের পরিবর্তে নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, “সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকির মুখে। এবার থেকে পরিবেশবান্ধব পর্যটনের নিয়ম মানলে দ্বীপের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।”
সরকার আশা করছে, এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক প্রতিবেশ সংরক্ষিত থাকবে এবং দ্বীপটি হবে দায়িত্বশীল ও টেকসই পর্যটনের একটি উদাহরণ।
এর আগে, মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সভাপতিত্ব করেন। সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, এবং ই-টিকেটিং ব্যবস্থাপনা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


