ইলিশের প্রজনন সুরক্ষায় পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে ২২ দিনের যে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা আজ (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে শনিবার থেকেই নদীতে নামার অপেক্ষায় রয়েছেন চাঁদপুরের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক জেলে।
তাদের আশা—দীর্ঘ বিরতির পর রূপালি ইলিশে ভরে উঠবে জেলের জাল, ফিরবে জীবনের হাসি। তবে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ার আশঙ্কাও তাড়া করছে অনেককে।
নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। এই সময় জীবিকা হারিয়ে কঠিন সময় পার করেছেন জেলেরা। সরকার চাঁদপুরের নিবন্ধিত ৪৫ হাজার ৬১৫ জেলে পরিবারকে ২৫ কেজি করে চাল সহায়তা দিলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে অভিযোগ তাদের।
নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামার প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত জেলেরা—কেউ নৌকা মেরামত করছেন, কেউবা পুরনো জাল সেলাই করে নিচ্ছেন নতুনভাবে। চাঁদপুর সদরের আনন্দবাজার এলাকার জেলে রকিবুল বলেন,
“সরকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দিসে, আমরা তা মানছি। কিন্তু কিছু অসাধু জেলে লুকিয়ে মাছ ধরেছে। এখন আমরা একবুক আশা নিয়ে নদীতে নামব—ইলিশ পাই কি না আল্লাহই জানে।”
আরেক জেলে আকবর বলেন,
“ভরা মৌসুমেও ইলিশ পাইনি। এখন মৌসুম শেষ। নদীতে মাছ না থাকলে সংসার চালাবো কীভাবে?”
অন্যদিকে, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন জানান, এ বছর মা ইলিশ রক্ষায় চার শতাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যারা আইন অমান্য করেছে, তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,
“চাঁদপুরে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল হয়েছে। এবার ইলিশ যেভাবে ডিম ছেড়েছে, তা জাটকা হয়ে বেড়ে উঠলে ভবিষ্যতে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়বে।”
চাঁদপুরের নদীপাড় এখন প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে—নিষেধাজ্ঞা শেষে মধ্যরাত পেরোলেই আবার জাল ফেলবে জেলেরা, ইলিশে ভরবে নদী আর স্বপ্নে ভরবে তাদের মুখ।


