ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলে আরও তিনটি নতুন সেনাঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত। দেশটির উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ শিলিগুড়ি করিডর বা ‘চিকেনস নেক’ এলাকায় প্রতিরক্ষা জোরদার করার অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।
ভারতের মূল ভূখণ্ডকে সাতটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত এই করিডর। চারদিক থেকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চীনের ঘেরা এই এলাকা কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।
সাম্প্রতিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ভারতের সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর. সি. তিওয়ারি গত বৃহস্পতিবার আসাম রাজ্যের ধুবড়ি শহরে ‘লাচিত বোরফুকান মিলিটারি স্টেশন’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এটি বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, এতদিন বাংলাদেশ সীমান্তের সবচেয়ে কাছাকাছি ভারতীয় সেনাঘাঁটি ছিল শিলচরের মাসিমপুরে, যা সীমান্ত থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে। নতুন ঘাঁটিটি তুলনামূলকভাবে অনেক কাছাকাছি হওয়ায় কৌশলগতভাবে তা গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে।
এ ছাড়া আসাম-বাংলাদেশ সীমান্তের ধুবড়ির বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের চোপড়ায় আরও দুটি নতুন ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডে বলছে, এটি ভারতের পূর্ব সীমান্তে নজরদারি, দ্রুত প্রতিক্রিয়া ও লজিস্টিক সহায়তা জোরদারের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিলিগুড়ি করিডর এখন বহুস্তরীয় নিরাপত্তাবলয়ে সুরক্ষিত। এ অঞ্চলের প্রতিরক্ষা তদারক করছে সুখনাস্থ ত্রি-শক্তি কর্পস (৩৩-কর্পস)। আকাশপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গের হাশিমারা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন রাফাল যুদ্ধবিমান, মিগ সিরিজের বিমান ও ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্ট।
এ ছাড়া অঞ্চলটিতে উন্নত তিন স্তরের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে—রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র, ইসরায়েল-ডিআরডিও যৌথ এমআরএসএএম সিস্টেম এবং দেশীয় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের দাবি, এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মূলত চীন ও অন্যান্য শত্রুপক্ষের বিমান অনুপ্রবেশ ঠেকাতে স্থাপন করা হয়েছে।


