ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে সিটি স্ক্যান মেশিনে যুক্ত হবে এআই ডিভাইস; দ্রুত শনাক্ত হবে ব্রেইনের ক্ষতি, নির্ধারিত হবে চিকিৎসা পরিকল্পনা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির প্রয়োগে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চালু হতে যাচ্ছে এআই-ভিত্তিক আধুনিক চিকিৎসা সেবা। বিশেষ করে স্ট্রোকের রোগীদের দ্রুত ও নির্ভুল চিকিৎসা নিশ্চিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ জানান, খুব শিগগিরই স্ট্রোকের রোগীদের চিকিৎসায় এআই পদ্ধতি চালু করা হবে। এ পদ্ধতিতে সিটি স্ক্যান মেশিনের সঙ্গে একটি বিশেষ ডিভাইস সংযুক্ত থাকবে, যা সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। কোনো রোগীর সিটি স্ক্যান করার পর তার ব্রেইনের ক্ষতির মাত্রা এবং রক্ত জমাটের অবস্থান তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করবে এআই সিস্টেম। এরপর ওই তথ্য সার্ভারে প্রক্রিয়াকৃত হয়ে চিকিৎসককে সঠিক চিকিৎসা নির্দেশনা দেবে।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মেকানিক্যাল থ্রমবেকটমি (এমটি) নামের একটি আধুনিক চিকিৎসা প্রক্রিয়া চালু করেছি, যার মাধ্যমে জমাট রক্তের দলা অপসারণ করা সম্ভব। এআই সফটওয়্যার ব্রেইনের কোন স্থানে রক্ত জমাট সরালে সর্বোত্তম ফল পাওয়া যাবে তা নির্ধারণে সহায়তা করবে।”
ডা. গিয়াস উদ্দিন জানান, দেশে স্নায়ু রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে—এর প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, এবং অতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাদ্যাভ্যাস। জীবনযাত্রার অনিয়ম, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব ও অতিরিক্ত গ্যাজেট ব্যবহারের কারণেও তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে বিশেষায়িত স্নায়ুরোগ হাসপাতাল স্থাপন করা গেলে অনেক রোগী উপকৃত হবেন। জেলা পর্যায়ে সিটি স্ক্যান ও প্রশিক্ষিত চিকিৎসক থাকলে প্রাথমিক পর্যায়েই স্ট্রোক রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।”
সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে ডা. গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ুস্ট্রোকের উপসর্গ সম্পর্কে মানুষকে জানাতে সারাদেশে ক্যাম্পেইনের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক ও মসজিদের ইমামদের সম্পৃক্ত করলে গ্রামীণ পর্যায়ে সচেতনতা আরও বাড়বে।”


