ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনার পর প্রায় ৬৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও হামলায় জড়িত শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ও মোটরসাইকেল চালক আলমগীরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ নিয়ে তাদের বর্তমান অবস্থান ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের দাবি করেছেন, ফয়সাল ও আলমগীর দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। তার দাবি অনুযায়ী, তারা বর্তমানে ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরে অবস্থান করছেন। এ পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন বলে আওয়ামী লীগের এক নেতার ব্যক্তিগত সহকারী মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লবের নামও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে এ দাবিকে নাকচ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্দেহভাজনদের পাসপোর্ট ব্লক করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত তাদের দেশত্যাগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ডিএমপির ধারণা, ফয়সাল ও আলমগীর এখনো দেশের মধ্যেই আত্মগোপনে রয়েছেন এবং দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার ময়মনসিংহের ভুটিয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে তারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। তবে এ ঘটনায় সহায়তাকারী স্থানীয় একজন ব্যক্তিকে এখনও আটক করা যায়নি।
এ ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় তৎপরতা বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের দেশ ছাড়তে না দেওয়ার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
এদিকে ভারত সরকার বাংলাদেশ থেকে ওঠা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, ভারতের ভূখণ্ড কখনোই কোনো দেশের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক বা বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় না আনতে পারলে ভবিষ্যতে এ ধরনের সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি বাড়বে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা না বাড়িয়ে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সব পক্ষের সংযম ও দায়িত্বশীল ভূমিকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


