বিদ্যালয়গামী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জগতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে যেন তার উল্টো চিত্রই দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
বিদ্যালয়ের প্রবেশপথের সামনে বিশাল একটি পুকুর। সেই পুকুরের ওপর দিয়ে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেতে হয় ছাত্র–ছাত্রীদের। সামান্য অসাবধানতা মানেই পানিতে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। অথচ এভাবেই বছরের পর বছর ধরে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, কয়েক দফায় তারা বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও আবেদন করা হয়েছে। তবুও সমস্যার স্থায়ী সমাধান এখনও হয়নি।
বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তখন সাঁকো পিচ্ছিল হয়ে পড়ে, ফলে অভিভাবকেরা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতেও ভয় পান।
১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত জগতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের একটাই দাবি—শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ রাস্তা নির্মাণ করা হোক।
স্থানীয়রা বলেন, “গ্রামের অন্যদিকে উন্নয়ন হলেও এই বিদ্যালয়ের পথে কেউ নজর দেয় না। ছোট ছোট শিশুরা বই-খাতা ও ব্যাগ নিয়ে এভাবে সাঁকো পার হয়—এ দৃশ্য দেখে আমাদেরও কষ্ট লাগে।”
শাহজাদপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, বিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিক আবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকাকে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যতদিন না পুকুরের ওপর স্থায়ী রাস্তা তৈরি হবে, ততদিন এই ঝুঁকি থেকেই যাবে।
প্রশ্ন রয়ে যায়—শিক্ষালাভের মৌলিক অধিকার পেতে গিয়ে যদি শিশুদের প্রতিদিন এমন বিপদের মুখে পড়তে হয়, তবে কি গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা আজও অবহেলার ছায়ায় ঢাকা?


