রম্য লেখক, আমিনুল হকঃ
প্রকৃত বন্ধুত্বের কোনো সীমারেখা নেই। কোনো বাধা তাকে আটকাতে পারে না। পরস্পরের প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর বিশ্বাসই হলো বন্ধুত্বের খোরাক।
দীর্ঘদিন পর দেখা হলে একে অপরকে জড়িয়ে ধরা, এক কাপ চা ভাগ করে পান করা কিংবা নাম ধরে ডেকে ওঠাই বন্ধুত্বের আনন্দকে নতুন করে জাগিয়ে তোলে। ছবিতে আছেন মানিক ও নিরেন—আমার পরম দুই বন্ধু। আমাদের পথচলা শুরু রাজশাহী কলেজ থেকে, তারপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে সহপাঠী হিসেবে।
নিরেনের বাড়ি নাটোরে—বনলতা সেনের দেশ। আর মানিকের বাড়ি পুঠিয়া রাজবাড়ীর পাশে। নিরেনের বাড়ি যাওয়ার সুযোগ এখনো হয়নি, তবে মানিকের বাড়ি গিয়েছি বহুবার। রাজশাহী গেলে প্রায়ই তার বাড়িতে রাত কাটাতাম। গভীর রাত পর্যন্ত চলত জীবনের নানা গল্প, ভাগাভাগি স্মৃতি। মানিকও এসেছে আমার বাড়ি।
এই আসা-যাওয়ার মাঝেই আমাদের প্রিয় বন্ধু মিজান চলে গেছে না-ফেরার দেশে। মিজানের বাড়ি গিয়েছি কয়েকবার। তার বাগানের আম খেয়েছি, সাথে করে এনেওছিলাম।
বন্ধু বেলালের কথাও না বললেই নয়। প্রাণখোলা হাসিই যার পরিচয়। হাসির কোনো উপলক্ষ পেলেই বেলাল প্রাণভরে হাসত। ক্যাম্পাসে আমরা এক কাপ চা দুজন মিলে ভাগ করে খেতাম, এমনকি একটি কলা ভাগ করে খাওয়ার স্মৃতিও আজও মনে ভাসে। সে দৃশ্য মনে পড়লেই আজও আমরা হেসে উঠি।
বন্ধুত্বের এই স্মৃতিগুলোই জীবনকে করে তোলে আরও রঙিন, আরও মূল্যবান।


