রম্য লেখক, আমিনুল হকঃ
বাঙলার অপরূপ রূপ দেখতে হলে একসময় মেঠো পথে হাঁটতে হতো। চোখ যেদিকে যেত, দেখা মিলত শুধু নিরব-শান্ত সবুজে ঘেরা গ্রাম, ঘন পল্লব আর পুষ্পে ঢাকা প্রকৃতি। সেই দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে দিত, মনে আনত অদ্ভুত দোলা।
কিন্তু বিধি বাম—কালের বিবর্তনে গ্রামবাংলা থেকে মেঠো পথ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন কিংবা যুগের চাহিদায় চেনা মেঠো পথ আজ পরিণত হয়েছে পিচঢালা সড়কে। অথচ এই পথ নিয়েই লেখা হয়েছে অসংখ্য গল্প, কবিতা ও উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, জসীম উদ্দীন, বঙ্কিমচন্দ্রসহ অনেক মনীষী তাঁদের সৃজনশীলতায় খুঁজে পেয়েছেন কাদা-মাটির পথের অনুপ্রেরণা।
শৈশবে শিশিরভেজা ঘাসে হেঁটে যাওয়া, লুটোপুটি খেলে ভিজে যাওয়া পা—এসবই ছিল অবিস্মরণীয় আনন্দ। এখন সেসব কেবল স্মৃতির খোরাক। কালেভদ্রে শিশিরের পরশ পেলেও আর সেই স্বাদ মেলে না।
কয়েক দিন আগে সহকর্মী আদনান বসুনিয়া ও নুরুদ্দিন মণ্ডলকে নিয়ে বের হয়েছিলাম গ্রামবাংলার মেঠো পথ খুঁজতে। কিন্তু হায়! কোথাও মেলে না সেই প্রিয় মেঠোপথ। চারদিকে শুধু পিচঢালা রাস্তা, চলছে গাড়ির সারি। চোখে পড়ল কেবল হাটুরে পথিক, বাজার সওদা কাঁধে নিয়ে তিনিও হেঁটে যাচ্ছেন পিচঢালা পথ বেয়ে নিজের গৃহের দিকে।


