
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রায় সকল মানুষের জন্যই বেদনাদায়ক একটা বিষয়। এটার কারনে পেট ব্যথা, পেট ফাঁপা এবং অন্যান্য সমস্যাও তৈরি করে। মলত্যাগ নিয়মিত না হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। এর জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বেশ কিছু কারণ দায়ী। যেমন অনুপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত খাবারের সময়, দীর্ঘ সময় বসে থাকা, অপর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ ইত্যাদি। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগে থাকেন তাহলে বেশ কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার বিবেচনা করতে পারেন। সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো সঠিক ফল চিনে নিয়মিত খাওয়া।

১. কলাঃ- কলাতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার রয়েছে। যা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পাকা কলা মানব শরীরের অন্ত্রের সিন্ড্রোম উন্নত করে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে উপস্থিত মাইক্রোভিলিকে আরও ভালোভাবে কাজ করতে দেয়, হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এক্ষেত্রে পুরোপুরি পাকা কলা খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ থাকে এবং এর বিপরীত প্রভাব থাকে – যা ডায়রিয়ায় ভুগছেন এমন কারও জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। এজন্য নিয়মিত সকাল এবং রাতে কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে প্রতিকার পাওয়া যায়।

২. কমলাঃ- কমলাতে প্রচুর পরিমানে ফাইবার রয়েছে এবং ভিটামিন সি-এর একটি বিশেষ সতেজ উৎস হিসেবে বিবেচিত। কমলা খেলে আপনি প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পেতে পারেন। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কমলায় ন্যারিনজেনিন (একটি ফ্ল্যাভোনয়েড) যৌগের উপস্থিতি কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত রোগীদের সাহায্য করতে পারে।

৩. নাশপাতিঃ- নাশপাতিতে কেবল মাত্র ফাইবারই থাকে না বরং ফ্রুক্টোজ এবং সরবিটলও থাকে। শেষের দুটি রেচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং এর মাধ্যমে আমাদের পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এটির খেলে মল নরম করে এবং অধিক চাপের মাধ্যমে মলত্যাগ সহজ করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নিয়মিত নাশপাতি খেতে পারেন।

৪. আপেলঃ- আপেল কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার উপশম করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। আপেলের খোসার অংশে অদ্রবণীয় ফাইবার থাকে এবং মলত্যাগ বৃদ্ধি করে, এজন্য আপেলের খোসাসহ খাবার পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকরা। ফলের মধ্যে দ্রবণীয় ফাইবারও থাকে, বিশেষ করে পেকটিন নামক একটি খাদ্যতালিকাগত ফাইবার। তবে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে বিশেষজ্ঞরা খাওয়ার আগে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন।

৫. পেঁপেঃ- পেঁপে একটি কম ক্যালরিযুক্ত ফল যা পানির অভাব পূরন করে এবং ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। এটি মলত্যাগ নিয়ন্ত্রণ করে এবং মলত্যাগে সাহায্য করে। এতে পেপেইনও রয়েছে, যা হজমে সহায়তা করার জন্য পরিচিত একটি এনজাইম। পেঁপে কোনো খাবারের সঙ্গে যোগ না করে খাওয়াই ভালো। সুস্বাদু এই ফল নিয়মিত খেলে পেটের সুস্থতা অনেকটাই নিশ্চিত থাকে।