ফেনীতে ১৩ মাস পর মামলা, ৩ সাংবাদিকসহ আসামি ১০৬ জন

ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৩ মাস পর একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এনায়েত উল্যাহ নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন।

আবেদনে আসামি করা হয়েছে ৩ সাংবাদিককে—দৈনিক দেশ রূপান্তর ও ইউএনবির ফেনী প্রতিনিধি শফি উল্লাহ রিপন, দৈনিক ফেনীর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শাখাওয়াত হোসেন ডন চৌধুরী এবং প্রতিবেদক সাহেদ সাব্বিরকে।

এছাড়া মামলায় ফেনী-৩ আসনের সাবেক সাংসদ লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী-২ এর সাবেক সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজিসহ মোট ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আরও ৫০–১০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়।

এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মহিপালে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে আসামিদের নির্দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে ৯ জন নিহত ও ২০০-র বেশি আহত হন। বাদী নিজেও গুলিবিদ্ধ হন বলে দাবি করেন। চিকিৎসা ও আর্থিক সংকটের কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে সাংবাদিকদের আসামি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংবাদকর্মীরা। বুধবার রাতেই ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জরুরি সভা করে তারা। এ মামলাকে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশকি দেন।

সাংবাদিক শফি উল্লাহ রিপন বলেন, “সম্প্রতি আমরা সোনাগাজীতে সালিশ বাণিজ্য ও চুরি-ডাকাতি নিয়ে প্রতিবেদন করেছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে একটি পক্ষ আমাদের এই মামলায় জড়িয়েছে। অথচ জুলাই আন্দোলনে আমিও আহত হয়েছিলাম।”

অন্যদিকে বাদী এনায়েত উল্যাহ দীর্ঘ সময় পর মামলা করার কারণ হিসেবে চিকিৎসাধীন অবস্থার কথা বললেও সাংবাদিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনো মন্তব্য না করে কল কেটে দেন।

ফেনী জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, “এক বছরের বেশি সময় পর এমন মামলা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রকৃত মামলা দুর্বল করা ও জুলাই আন্দোলনকে বিতর্কিত করতেই এসব করা হচ্ছে।”

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp