Close Menu
  • সর্বশেষ
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • অর্থনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • সারাদেশ
    • রাজশাহী
      • নওগাঁ
        • মান্দা
      • রাজশাহী
      • বগুড়া
      • পাবনা
      • চাঁপাইনবাবগঞ্জ
      • জয়পুরহাট
      • নাটোর
      • সিরাজগঞ্জ
    • ঢাকা
      • কিশোরগঞ্জ
      • শরীয়তপুর
      • টাঙ্গাইল
      • রাজবাড়ী
      • মুন্সিগঞ্জ
      • মানিকগঞ্জ
      • মাদারীপুর
      • ফরিদপুর
      • নারায়ণগঞ্জ
      • নরসিংদী
      • ঢাকা
      • গোপালগঞ্জ
      • গাজীপুর
    • রংপুর
      • ঠাকুরগাঁও
      • দিনাজপুর
      • নীলফামারী
      • পঞ্চগড়
      • রংপুর
      • লালমনিরহাট
      • কুড়িগ্রাম
      • গাইবান্ধা
    • চট্টগ্রাম
      • চট্রগ্রাম
      • রাঙ্গামাটি
      • লক্ষ্মীপুর
      • কক্সবাজার
      • কুমিল্লা
      • খাগড়াছড়ি
      • চাঁদপুর
      • নোয়াখালী
      • ফেনী
      • বান্দরবান
      • ব্রাহ্মণবাড়িয়া
    • ময়মনসিংহ
      • জামালপুর
      • নেত্রকোনা
      • ময়মনসিংহ
      • শেরপুর
    • সিলেট
      • হবিগঞ্জ
      • মৌলভীবাজার
      • সিলেট
      • সুনামগঞ্জ
    • বরিশাল
      • বরিশাল
      • ঝালকাঠি
      • পিরোজপুর
      • পটুয়াখালী
      • ভোলা
      • বরগুনা
    • খুলনা
      • কুষ্টিয়া
      • চুয়াডাঙ্গা
      • সাতক্ষীরা
      • ঝিনাইদহ
      • নড়াইল
      • বাগেরহাট
      • মাগুরা
      • মেহেরপুর
      • যশোর
  • অন্যান্য
    • চাকুরি
    • সম্পাদকীয়
    • শিক্ষা
    • লাইফ স্টাইল
    • অপরাধ
  • ই-পেপার

Subscribe to Updates

Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

What's Hot
By বরেন্দ্রকণ্ঠ ডেস্ক১১/০৯/২০২৫

“নেপালে জেন-জি: নেতৃত্বের জন্য আমরা এখনও প্রস্তুত নই”

১১/০৯/২০২৫
By বরেন্দ্রকণ্ঠ ডেস্ক১১/০৯/২০২৫

নেপালে সেনা সদর দপ্তরে বৈঠক, জেন-জির পছন্দ সুশীলা কার্কি

১১/০৯/২০২৫
By বরেন্দ্রকণ্ঠ ডেস্ক১১/০৯/২০২৫

হেলিকপ্টারের রশিতে ঝুলে প্রাণে বাঁচলেন নেপালের মন্ত্রীরা

১১/০৯/২০২৫
Facebook X (Twitter) Instagram
বরেন্দ্রকণ্ঠ
Facebook X (Twitter) Instagram YouTube
Subscribe
  • সর্বশেষ
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • অর্থনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • সারাদেশ
    • রাজশাহী
      • নওগাঁ
        • মান্দা
      • রাজশাহী
      • বগুড়া
      • পাবনা
      • চাঁপাইনবাবগঞ্জ
      • জয়পুরহাট
      • নাটোর
      • সিরাজগঞ্জ
    • ঢাকা
      • কিশোরগঞ্জ
      • শরীয়তপুর
      • টাঙ্গাইল
      • রাজবাড়ী
      • মুন্সিগঞ্জ
      • মানিকগঞ্জ
      • মাদারীপুর
      • ফরিদপুর
      • নারায়ণগঞ্জ
      • নরসিংদী
      • ঢাকা
      • গোপালগঞ্জ
      • গাজীপুর
    • রংপুর
      • ঠাকুরগাঁও
      • দিনাজপুর
      • নীলফামারী
      • পঞ্চগড়
      • রংপুর
      • লালমনিরহাট
      • কুড়িগ্রাম
      • গাইবান্ধা
    • চট্টগ্রাম
      • চট্রগ্রাম
      • রাঙ্গামাটি
      • লক্ষ্মীপুর
      • কক্সবাজার
      • কুমিল্লা
      • খাগড়াছড়ি
      • চাঁদপুর
      • নোয়াখালী
      • ফেনী
      • বান্দরবান
      • ব্রাহ্মণবাড়িয়া
    • ময়মনসিংহ
      • জামালপুর
      • নেত্রকোনা
      • ময়মনসিংহ
      • শেরপুর
    • সিলেট
      • হবিগঞ্জ
      • মৌলভীবাজার
      • সিলেট
      • সুনামগঞ্জ
    • বরিশাল
      • বরিশাল
      • ঝালকাঠি
      • পিরোজপুর
      • পটুয়াখালী
      • ভোলা
      • বরগুনা
    • খুলনা
      • কুষ্টিয়া
      • চুয়াডাঙ্গা
      • সাতক্ষীরা
      • ঝিনাইদহ
      • নড়াইল
      • বাগেরহাট
      • মাগুরা
      • মেহেরপুর
      • যশোর
  • অন্যান্য
    • চাকুরি
    • সম্পাদকীয়
    • শিক্ষা
    • লাইফ স্টাইল
    • অপরাধ
  • ই-পেপার
বরেন্দ্রকণ্ঠ
Home » ‘মিশরীয় রাজা’ মোহাম্মদ সালাহর গল্প

‘মিশরীয় রাজা’ মোহাম্মদ সালাহর গল্প

  • বরেন্দ্রকণ্ঠ ডেস্ক
  • আগস্ট ১৫, ২০২৫
  • ৪:২০ অপরাহ্ণ
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp

নাগরিগ থেকে বিশ্বমঞ্চে

“যখনই আমি এখানে ঢুকি, মনে পড়ে সালাহ কীভাবে নড়াচড়া করত, কীভাবে বল নিয়ন্ত্রণ করত—এটা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু,” বললেন মোহাম্মদ সালাহর প্রথম দিকের কোচদের একজন, গামরি আবদেল-হামিদ এল-সাদানি।

কায়রো থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা উত্তরে অবস্থিত নাগরিগ গ্রামের যুব কেন্দ্রের নতুন গাঢ় সবুজ গেট খুলে তিনি স্মৃতিচারণ করছিলেন। এখান থেকেই শুরু হয়েছিল বিশ্বের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ডের পথচলা—যিনি মে মাসে লিভারপুলকে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা এনে দিয়েছিলেন।

নাগরিগের রাস্তায় সাত বছরের সালাহ ব্রাজিলের রোনালদো, ফ্রান্সের জিদান বা ইতালির ফ্রান্সেস্কো টটির ভান করে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতেন। এল-সাদানি বলেন, “মোহাম্মদ তার সতীর্থদের তুলনায় ছোট ছিল, কিন্তু বড় ছেলেরাও যা পারত না, সে তা করত। তার শট ছিল অবিশ্বাস্য শক্তিশালী, আর তার দৃঢ় সংকল্প স্পষ্ট ছিল।”

৩৩ বছর বয়সী সালাহ লিভারপুলে নবম মৌসুমে পা রাখতে চলেছেন। ২০১৭ সালে যোগ দেওয়ার পর থেকে তিনি ৪০২টি ম্যাচে ২৪৫ গোল করেছেন, জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ ঘরোয়া সব শিরোপা। তবে জাতীয় দলের হয়ে এখনো বড় সাফল্য আসেনি। ডিসেম্বরে আফ্রিকা কাপ অব নেশনস ও ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে বিবিসি স্পোর্ট মিশর সফর করে খোঁজ নিয়েছে—কীভাবে এক সাধারণ গ্রাম্য ছেলেটি জাতীয় আইকনে পরিণত হলেন।

কায়রোর এক ক্যাফেতে বসে লামিসে এল-সাদেক বলেন, “সালাহ লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর আমরা প্রতিটি ম্যাচ একসাথে দেখতাম। বাবার মৃত্যুর পরও তার খেলা আমাকে সেই আনন্দ মনে করিয়ে দেয়।”

নীল নদের বদ্বীপের ছোট্ট কৃষি গ্রাম নাগরিগে সালাহর শৈশব কেটেছে। পরিবার ও গ্রামের মানুষের সহায়তা ছিল তার সাফল্যের ভিত্তি। সালাহর নামে যুব কেন্দ্রটির আধুনিকায়ন হয়েছে, সর্বত্র তার ছবি, জার্সি, দেয়ালচিত্র ছড়িয়ে আছে।

‘সব বাচ্চাই সালাহ হতে চায়’

নাগরিগের শিশুরা, যেখানে সালাহর জন্ম এবং বেড়ে ওঠা, তারা খেলোয়াড়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করার স্বপ্ন দেখে।

মিশরের নীল নদের বদ্বীপে অবস্থিত ছোট্ট কৃষি গ্রাম নাগরিগ ঘিরে আছে সবুজ ক্ষেত—যেখানে জুঁই ও তরমুজের চাষ হয়। কাঁচা রাস্তা দিয়ে পাশাপাশি চলে জলমহিষ, গরু, গাধার গাড়ি, মোটরবাইক আর ঘোড়ার গাড়ি।এই নিরিবিলি গ্রামেই কেটেছে বিশ্বের অন্যতম সেরা ও সফল ফরোয়ার্ড, স্নেহের সঙ্গে যাকে ডাকা হয় ‘মিশরীয় রাজা’, সেই মোহাম্মদ সালাহর শৈশব।“সালাহর সাফল্যের পেছনে তার পরিবারই আসল ভিত্তি ও রহস্য,” বললেন এল-সাদানি, যিনি আট বছর বয়সে সালাহকে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজেকে তার প্রথম কোচ দাবি করেন। “তারা এখনও এখানে নম্রতা, মূল্যবোধ ও শ্রদ্ধার সঙ্গে বাস করেন। এটাই কারণ, মানুষ তাদের এত ভালোবাসে।”গ্রামের এই সেরা পুত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সম্প্রতি যুব কেন্দ্রটিকে আধুনিক রূপ দেওয়া হয়েছে। পেশাদার প্রশিক্ষণ মাঠের মতো সবুজ টার্ফে খেলার সুযোগ এখন গ্রামবাসীর গর্বের বিষয়।

সালাহর পরিবারের ত্যাগের কথা স্মরণ করে এল-সাদানি বলেন, “ছোটবেলা থেকেই তারা অবিশ্বাস্যভাবে সহায়ক ছিল, বিশেষ করে তার বাবা ও চাচা—যিনি এই কেন্দ্রের বর্তমান চেয়ারম্যান।” তিনি দাঁড়িয়ে আছেন এক গোলপোস্টের পিছনে ঝুলানো বিশাল ছবির পাশে, যেখানে সালাহ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি হাতে হাসছেন।

নাগরিগে সর্বত্রই সালাহর ছাপ—বাচ্চাদের গায়ে লিভারপুল ও মিশরের জার্সি, পিছনে সালাহর নাম ও নম্বর। তার পুরনো স্কুলের বাইরে দেয়ালচিত্র, টুকটুকে লেগে থাকা হাস্যোজ্জ্বল সালাহর স্টিকার—সবই যেন তার উপস্থিতি জানান দেয়।

নাগরিগে সালাহর দোকানের বাইরে নাপিত আহমেদ এল মাসরি, যিনি সালাহর চুল কাটতেন।

গ্রামের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে এক নাপিতের দোকান, যেখানে কিশোর সালাহ প্রশিক্ষণ শেষে চুল কাটাতে আসতেন। নাপিত আহমেদ এল মাসরি বলেন, “আমিই তাকে ওই কোঁকড়ানো চুল আর দাড়ির স্টাইল দিয়েছি। বন্ধুরা বলত, শহরে গিয়ে কাটাও, কিন্তু সে সবসময় আমার কাছেই আসত। পরের দিন বন্ধুরা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করত—‘তোমার নাপিত কে?’”

মাসরি আরও স্মৃতিচারণ করে বলেন, “আমরা যখন প্লেস্টেশনে খেলতাম, সালাহ সবসময় লিভারপুল বেছে নিত। অন্যরা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বা বার্সেলোনা নিত, কিন্তু সে লিভারপুলেই থাকত।”

গ্রামের সব বাচ্চাই এখন সালাহ হতে চায়। তার ফুটবল জীবনের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় কায়রোভিত্তিক ক্লাব আরব কন্ট্রাক্টরস—অথবা আল মোকাওলুনে। সেখানে তিনি ছয় বছর কাটান।১৪ বছর বয়সে দলে যোগ দিয়ে প্রতিদিন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অনুশীলন করতেন সালাহ। স্কুল থেকে আগেভাগে বেরিয়ে আসার অনুমতি পেয়ে যেতেন, যেন প্রশিক্ষণ মিস না হয়। এই অধ্যবসায়ের গল্প আজ মিশরসহ সারা বিশ্বে কিংবদন্তি হয়ে গেছে।

একটি বিখ্যাত বাসযাত্রা দ্বারা গড়ে ওঠা

নাগরিগে একটি মাইক্রোবাস, যে মাইক্রোবাসে সালাহ সপ্তাহে বেশ কয়েকবার কায়রো যাতায়াত করতেন এবং ফিরে আসতেন, তার অনুরূপ।

নাগরিগের ধারে সরু রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে সাত আসনের একটি পুরনো সুজুকি ভ্যান। ভেতরে বসা যাত্রীরা অস্থির—“ওরা কি উঠছে না?” এটি কোনও নির্দিষ্ট সময়সূচীর বাস নয়; ড্রাইভার কেবল আসন পূর্ণ হলে তবেই রওনা দেন।

কিশোর বয়সে এই স্টপ থেকেই মোহাম্মদ সালাহ আরব কন্ট্রাক্টরস ক্লাবে প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘ ও কষ্টকর যাত্রা শুরু করতেন। “এটি ছিল কঠিন এবং ব্যয়বহুল এক যাত্রা,” স্মরণ করেন এল-সাদানি। “সে নিজের ওপর ভরসা করত, প্রায়ই একাই যেত। কল্পনা করুন, সকাল ১০টায় বেরিয়ে রাত প্রায় ১২টায় ফেরা—এটি কেবল শক্ত মানসিকতা ও সুস্পষ্ট লক্ষ্য থাকা একজনই সহ্য করতে পারে।”

আমরা যখন বাসে উঠি, পেছনে এক মা ও তার দুই ছেলের সাথে গাদাগাদি করে বসতে হয়। বাসিয়ুন শহরে পৌঁছে সেখান থেকে আরেকটি বাসে তান্তা, এরপর গাড়ি বদলে কায়রোর রামসেস বাস স্টেশন, এবং সেখান থেকে শেষ গন্তব্যে। সন্ধ্যার অনুশীলন শেষে আবার সেই একই দীর্ঘ পথ ধরে ফেরা।

কায়রোতে পৌঁছালে চোখে পড়ে সারি সারি সাদা মাইক্রোবাস—যাত্রীদের দ্রুত ওঠানামা, ক্রমাগত দৌড়ঝাঁপ। “প্রায় ১ কোটি জনসংখ্যার এই শহরে ৮০% মানুষ এভাবেই চলাচল করে,” জানান সাংবাদিক ওয়ায়েল এল-সায়েদ। “হাজার হাজার ভ্যান ২৪ ঘণ্টা চলছে।”

নাগরিগে একজন টুক-টুক চালক তার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এবং গাড়ির কাঁচে সালাহর স্টিকার লাগানো আছে।

বাসিয়ুন পর্যন্ত ছোট্ট পথই গরম ও অস্বস্তিকর; তাহলে সপ্তাহে কয়েকবার কিশোর সালাহর জন্য কায়রো যাত্রা কতটা কঠিন ছিল, তা সহজেই অনুমেয়।

সালাহকে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে নামানো কোচ হ্যানি রামজি মনে করেন, এই অভিজ্ঞতাই শীর্ষ পর্যায়ে সফলতার মানসিকতা গড়ে দেয়। “মিশরে ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে শুরু করা ভীষণ কঠিন,” বলেন রামজি—যিনি ১৯৯০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন এবং ১১ বছর বুন্দেসলিগায় কাটিয়েছেন।

“আমাকেও প্রথম ক্লাবে পৌঁছাতে ৫-৬ কিলোমিটার হাঁটতে হতো, বাবার পক্ষে ফুটবল বুট কেনা সম্ভব ছিল না। সালাহ এত বছর শীর্ষ পর্যায়ে টিকে আছে—এটি ১০০% সেই কষ্ট ও সংগ্রামের ফল,” যোগ করেন রামজি।

‘প্রতিরক্ষা করো না!’

কায়রোর ব্যস্ততম সেতুগুলোর একটির ওপর দিয়ে গাড়ি ছুটছে। হঠাৎ চোখে পড়ে—একটি বিশাল ইলেকট্রনিক বিলবোর্ডে আইসক্রিমের বিজ্ঞাপন মিলিয়ে গেছে, জায়গা নিয়েছে মোহাম্মদ সালাহর ছবি, পাশে বড় করে লেখা আরবি শব্দ ‘শুকরান’—অর্থাৎ ‘ধন্যবাদ’।

সেখান থেকে বেশি দূরে নয়, এক অফিসে বসে আছেন দিয়া এল-সায়েদ—সালাহর প্রাথমিক ক্যারিয়ারের অন্যতম প্রভাবশালী কোচ। ২০১১ সালে কলম্বিয়ায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে, যেখানে সালাহ প্রথম বিশ্বমঞ্চে আলো ছড়ান, তখন তিনি ছিলেন দলের কোচ।

কায়রোর একটি ক্যাফের বাইরে সালাহর একটি দেয়ালচিত্র।

“তখন দেশ অস্থির, বিপ্লব চলছিল—তাই টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন ছিল,” স্মৃতিচারণ করেন সবার পরিচিত ‘ক্যাপ্টেন দিয়া’। “সালাহ দলে এসেই নজর কাড়ে তার গতি ও একাগ্রতার জন্য। সে তর্ক করত না, মন দিয়ে শোনত, আর নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করত। তার যা সাফল্য, সবই প্রাপ্য।”

ক্যাপ্টেন দিয়া মনে করিয়ে দেন, একবার তিনি তরুণ সালাহকে বলেছিলেন—নিজের পেনাল্টি এরিয়ার কাছাকাছি না গিয়ে কেবল আক্রমণে মনোযোগ দিতে।
“তারপর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচে সে ১৮ গজের বক্সে ফিরে এসে পেনাল্টি দিয়ে ফেলল,” হাসতে হাসতে বলেন তিনি।
“আমি তাকে বলেছিলাম, ‘তুমি কেন আমাদের বক্সে? তুমি রক্ষণ করতে জানো না—ডিফেন্ড করো না!’”

দিয়া মজা করে যোগ করলেন, “গত মৌসুমে লিভারপুল প্রিমিয়ার লিগ জেতার পর শুনেছি, আর্নে স্লটও নাকি তাকে ডিফেন্ড না করতে বলেছেন। কিন্তু আমি-ই ছিলাম প্রথম কোচ, যে সালাহকে ডিফেন্ড না করার পরামর্শ দিয়েছিল।”

মিশরের ‘সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রদূত’

১৪ বছর ধরে সিনিয়র জাতীয় দলে খেলছেন মোহাম্মদ সালাহ। মিশরে তার গুরুত্ব এতটাই যে, তিনি আহত হলে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারাও খোঁজখবর নেন।
জাতীয় দলের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ আবৌদ স্মরণ করেন ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের সেই মুহূর্ত, যখন রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে লিভারপুলের হয়ে খেলার সময় সালাহ গুরুতর কাঁধের চোট পান। তখন জল্পনা শুরু হয়েছিল—তিনি কি রাশিয়া বিশ্বকাপ মিস করবেন?
“মিশরের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও আমাকে ফোন করেছিলেন,” বলেন আবৌদ। “আমি তাকে বলেছিলাম আতঙ্কিত না হতে, সব ঠিক হয়ে যাবে।”

কায়রোর মাদি এলাকায় নিজের মেডিকেল ক্লিনিকে বসে তিনি আরও বলেন, “আমি তখন তরুণ ছিলাম, দেশের ভেতর থেকে প্রচণ্ড চাপ ছিল। অনেকেই আমাকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এমনকি আমাদের বোর্ডের একজন সদস্য বলেছিলেন, আমি নাকি তখন বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।”
সালাহ অবশ্য সময়মতো সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের মধ্যে দুটি খেলেন। কিন্তু উরুগুয়ে, রাশিয়া ও সৌদি আরবের কাছে হেরে দ্রুত বিদায় নেয় মিশর।

সাবেক সহকারী কোচ মাহমুদ ফায়েজ মনে করিয়ে দেন, “সালাহ ২০১৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আমাদের প্রতিটি গোলের সঙ্গে জড়িত ছিল।” আলেকজান্দ্রিয়ায় কঙ্গোর বিপক্ষে ৯৫তম মিনিটে তার নাটকীয় পেনাল্টি জয়ে ২-১ গোলে নিশ্চিত হয় ২৮ বছর পর মিশরের বিশ্বকাপের টিকিট।
“কঙ্গো সমতা ফেরানোর পর ৭৫ হাজার দর্শক নীরব হয়ে গিয়েছিল,” বলেন ফায়েজ। “তারপর এল সেই পেনাল্টি—পুরো দেশ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে অপেক্ষা করছিল। সালাহ গোল করল, আমরা সবাই গর্বিত হলাম। ড্রেসিংরুমে সে নাচছিল, সবাইকে জড়িয়ে ধরছিল, বারবার বলছিল—‘আমরা পেরেছি, ২৮ বছর পর আমরা পেরেছি।’”

কায়রোর ‘দ্য মেকার’ ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন তারকা মিডো বলেন, “সালাহ মানসিক শক্তি, শৃঙ্খলা ও নিষ্ঠার দৃষ্টান্ত। তিনি শুধু মিশরের নয়, আফ্রিকারও সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রদূত। তিনি ইউরোপীয় ক্লাবগুলোকে আরব খেলোয়াড়দের সম্মান করতে বাধ্য করেছেন। এখন ইউরোপে মিশরের কোনো তরুণ খেলোয়াড়কে দেখলেই ক্লাবগুলো সালাহর কথা ভাবে—এটাই তার সবচেয়ে বড় অবদান।”

যেখানে শুরু, সেখানেই ফিরে যাওয়া

নাগরিগে ফিরে গেলে দেখা মেলে ৭০ বছর বয়সী রাশিদার সঙ্গে। একটি ছোট দোকান থেকে সবজি বিক্রি করেন তিনি। রাশিদা বলেন, সালাহ শুধু তার জীবনই বদলে দেননি, বদলে দিয়েছেন জন্ম ও বেড়ে ওঠা গ্রামের শত শত মানুষের জীবনও।
“মোহাম্মদ একজন ভালো মানুষ। তিনি শ্রদ্ধাশীল, দয়ালু—আমাদের কাছে তিনি ভাইয়ের মতো,” বলেন রাশিদা।

তিনি গ্রামের সেইসব মানুষের একজন, যারা সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন সালাহর দাতব্য সংস্থার কাজ থেকে। এই সংস্থা সেই জায়গাটিকেই ফিরিয়ে দিচ্ছে, যেখান থেকে তার ফুটবল তারকা হওয়ার যাত্রা শুরু।
মোহাম্মদ সালাহ চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাসান বকর বলেন, “এর মূল লক্ষ্য হলো এতিম, তালাকপ্রাপ্ত ও বিধবা নারী, দরিদ্র এবং অসুস্থদের সহায়তা করা। আমরা মাসিক আর্থিক সাহায্য দিই, উৎসব ও বিশেষ উপলক্ষে খাবার ও খাদ্যপ্যাকেট বিতরণ করি। যেমন, রাশিদা—তিনি একজন বিধবা—তার পেনশনের পাশাপাশি আমরা অতিরিক্ত সহায়তাও দিই।”

বকর আরও জানান, “যখন মোহাম্মদ এখানে থাকেন, তিনি বিনয়ী থাকেন, সাধারণ পোশাকে চলাফেরা করেন। কখনও নিজেকে আলাদা করে দেখান না। তার এই বিনয় আর দয়ার কারণেই মানুষ তাকে ভালোবাসে।”

রাশিদার মতো মানুষকে সহায়তার পাশাপাশি সালাহ গ্রামে উন্নয়নমূলক কাজেও অবদান রেখেছেন। নতুন ডাকঘর, অ্যাম্বুলেন্স ইউনিট, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও পয়ঃনিষ্কাশন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জমি ও অর্থ দিয়েছেন তিনি।

গত মৌসুমে যখন লিভারপুল ২০তম বারের মতো ইংলিশ লিগ শিরোপা জিতল, তখন নাগরিগের স্থানীয় একটি ক্যাফেতে ভিড় জমান শত শত মানুষ। টেলিভিশনের পর্দায় প্রিয় ছেলের জয় দেখে উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা গ্রাম।

এবার কি ২০২৫-২৬ মৌসুমে সালাহর নিজ গ্রামে আবারও উৎসব হবে?
২০১৯-২০ ও ২০২৪-২৫ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতলেও জাতীয় দলের হয়ে এখনো কোনও বড় ট্রফি তুলতে পারেননি তিনি। সালাহর আগের প্রজন্ম ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে টানা তিনবার আফ্রিকা কাপ অব নেশনস জিতেছিল। এরপর ২০১৭ সালে ক্যামেরুন এবং ২০২১ সংস্করণে সেনেগালের কাছে ফাইনালে হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে।

আগামী ২১ ডিসেম্বর শুরু হবে ২০২৫ আফ্রিকা কাপ অব নেশনস—যা অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের ছয় মাস আগে। মিশরের সমর্থকদের প্রশ্ন, ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা কি এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে বড় সাফল্য আনতে পারবেন?

সাবেক তারকা মিডো অবশ্য স্পষ্টভাবেই বলেন, “সালাহ ইতিমধ্যেই তার উত্তরাধিকার গড়ে ফেলেছে। সে আমাদের ইতিহাসের সেরা মিশরীয় ফুটবলার। তাকে আর কিছু প্রমাণ করতে হবে না—সে লিভারপুলের কিংবদন্তি, মিশরের কিংবদন্তি।”

সূত্রঃ বিবিসি নিউজ

Share this:

  • Click to share on Facebook (Opens in new window) Facebook
  • Click to share on X (Opens in new window) X
  • Click to share on WhatsApp (Opens in new window) WhatsApp

Related

PrevPreviousরাজশাহীতে একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার
Nextসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে সজাগ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টারNext
পছন্দগুলি
By বরেন্দ্রকণ্ঠ ডেস্ক১১/০৯/২০২৫

“নেপালে জেন-জি: নেতৃত্বের জন্য আমরা এখনও প্রস্তুত নই”

১১/০৯/২০২৫
By বরেন্দ্রকণ্ঠ ডেস্ক১১/০৯/২০২৫

নেপালে সেনা সদর দপ্তরে বৈঠক, জেন-জির পছন্দ সুশীলা কার্কি

১১/০৯/২০২৫
By বরেন্দ্রকণ্ঠ ডেস্ক১১/০৯/২০২৫

হেলিকপ্টারের রশিতে ঝুলে প্রাণে বাঁচলেন নেপালের মন্ত্রীরা

১১/০৯/২০২৫
জনপ্রিয়

নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য ৯৬ একর জমি অধিগ্রহনের প্রশাসনিক অনুমোদন 

২৮/০৭/২০২৫342 Views

যে চিকিৎসকরা ঝুঁকি নিয়ে আহতদের সেবা দিয়েছেন তারা ‘জুলাই নায়ক’ : প্রধান উপদেষ্টা

২৮/০৭/২০২৫210 Views

১৩০ বছরের বৃদ্ধ তফের মণ্ডলের পাশে বিএনপি নেতা এমএ মতিন

৩১/০৮/২০২৫129 Views
আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (সকাল ৬:২৭)
  • ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
  • ২৮শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
আমাদের সম্পর্কে

সম্পাদক ও প্রকাশক
মোঃ বেলায়েত হোসেন

যোগাযোগঃ ০১৫৪০-০০৫৪৮৬
ইমেইলঃ bknew2025@gmail.com

Facebook X (Twitter) YouTube WhatsApp
2025©Borendrokontho@ All Right Reserved.

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

 

Loading Comments...