
আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি বিলাসবহুল গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের এসব গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
খরচের হিসাব
প্রতিটি গাড়ির দাম ধরা হয়েছে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে ৬০টি গাড়ি কিনতে খরচ হবে ১০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। শুধু মন্ত্রীদের জন্যই নয়, আসন্ন নির্বাচনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের জন্যও গাড়ি কেনা হচ্ছে।
মোট ২৮০টি গাড়ি কেনায় সরকারের ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে—
- মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি বিলাসবহুল গাড়ি
- জেলা-উপজেলায় নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য ২২০টি গাড়ি (১৯৫টি পাজেরো ও ২৫টি মাইক্রোবাস)
বিতর্ক ও সমালোচনা
গাড়ি কেনার এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে নানা প্রশ্ন উঠছে। চলতি বছর সরকার এক পরিপত্রে নতুন যানবাহন কেনা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেও এই কেনাকাটায় সেই নির্দেশনা উপেক্ষিত হয়েছে। তাছাড়া, মন্ত্রীদের জন্য কেনা গাড়িগুলো এখনো ১০ বছরের পুরনো হয়নি, ফলে শর্তও লঙ্ঘিত হয়েছে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন— “পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, তার সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নয়। এটি দায়িত্বের বাইরে গিয়ে ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপের পরিপত্র উপেক্ষা করার সামিল। অনতিবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত।”
বাজেট বনাম ব্যয়
চলতি অর্থবছরের বাজেটে যানবাহন ক্রয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩২৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। কিন্তু ২৮০টি গাড়ি কিনতে খরচ হবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ, অতিরিক্ত ৯৬ কোটি টাকারও বেশি যোগানের অনুমোদন দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
সবচেয়ে বড় বিতর্ক উঠেছে— আগামী মন্ত্রিসভায় কতজন মন্ত্রী থাকবেন, তা কীভাবে এখনই নির্ধারণ করল অন্তর্বর্তী সরকার? এবং পরবর্তী সরকারের জন্য গাড়ি কেনার দায় তারা কেন নিচ্ছে?