
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দেশের সামরিক সক্ষমতায় নতুন মাত্রা যোগ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনাবাহিনীর রকেট ফোর্স কমান্ড গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এই বাহিনী শত্রুপক্ষকে “সব দিক থেকে” আঘাত হানতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
৭৮তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ইসলামাবাদে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন শেহবাজ শরিফ। তিনি একে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আরেকটি “গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক” হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে শেহবাজ শরিফ সব রাজনৈতিক দলকে ‘চার্টার অব স্টেবিলিটি’-তে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তার ভাষায়, এটি শুধু অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নয়, বরং জাতীয় স্বার্থে গঠিত একটি কাঠামো, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
ভারতের সঙ্গে সংঘাত প্রসঙ্গ
প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনার কথা উল্লেখ করে অভিযোগ করেন, বিনা প্ররোচনায় নয়াদিল্লি পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে পাকিস্তানি সেনারা মাত্র চার দিনের মধ্যেই ভারতকে “ঐতিহাসিক শিক্ষা” দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে তিনি সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জাহির বাবর এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নবীদ আশরাফের প্রশংসা করেন।
শেহবাজ বলেন, “যারা জীবন বাজি রাখতে প্রস্তুত— এমন জাতিকে কখনো পরাজিত করা যায় না।”
আন্তর্জাতিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তুরস্ক, সৌদি আরব, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও আজারবাইজানসহ মিত্র দেশগুলোর প্রতি সংঘাতের সময় কূটনৈতিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তার ভাষায়, এসব দেশের সমর্থন পাকিস্তানের আত্মবিশ্বাস ও কৌশলগত শক্তিকে আরও সুসংহত করেছে।
নতুন রকেট ফোর্সের তাৎপর্য
‘রকেট ফোর্স কমান্ড’ গঠনের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট প্রযুক্তির ব্যবহার আরও সমন্বিত ও উন্নত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এই বাহিনী স্থলভিত্তিক কৌশলগত ও কৌশলগত-পরবর্তী আক্রমণ সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি করবে, যা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা কৌশলে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে রকেট ফোর্সকে সেনাবাহিনীর কাঠামোর অংশ করা হলো, যা দেশটির সামরিক শক্তি বৃদ্ধির নতুন অধ্যায় সূচিত করল।