নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার সেননগর গ্রামের তরুণ নিতাই রবিদাস হত্যার বিচার, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ভূক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতে নওগাঁয় মানববন্ধন, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নওগাঁ মুক্তির মোড়ে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম), বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম (বিআরএফ) ও নাগরিক উদ্যোগের যৌথ আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিডিইআরএম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস। সঞ্চালনা করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট—নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি মিজানুর রহমান।
সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মহসিন রেজা, সিপিবি নওগাঁ জেলা শাখার সহসাধারণ সম্পাদক আলিমুর রেজা রানা, অ্যাডভোকেট বাবুল রবিদাস, সাংবাদিক ইউনিয়ন নওগাঁর সভাপতি এস.এম. আজাদ হোসেন মুরাদ, বাসদ নেতা রবিউল টুডু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম, সুধীর তির্কী, নয়ন পাহান, আদিবাসী নারী পরিষদের সভাপতি নিতু মুন্ডা, বিআরএফ সভাপতি মোহন রবিদাস, নিহতের মা জামিনী রানী রবিদাস, কাকা বাবুলাল রবিদাস ও অনিমা রানী রবিদাসসহ আরও অনেকে।
সমাবেশ শেষে মুক্তির মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডিসি-এসপি বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সাত দিনের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার না করলে ধামইরহাট উপজেলা ও থানা ঘেরাওসহ লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ। একই দাবিতে মহাদেবপুর বাসস্ট্যান্ডেও অনুরূপ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিডিইআরএম সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস বলেন, নিতাই হত্যার এক মাস পার হলেও এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় আমরা হতাশ। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
নিহতের মা জামিনী রানী রবিদাস বলেন, নিতাইয়ের কারো সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। আমরা পরিশ্রমী মানুষ। হয়তো আমাদের উন্নতি দেখে কেউ হিংসায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।
নিতাইয়ের কাকা দিলিপ রবিদাস জানান, ঘটনার পর মানববন্ধনের উদ্যোগ নিলে পুলিশ আমাদের তা করতে নিষেধ করে। তাদের আশ্বাসে অপেক্ষা করেছিলাম, কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি নেই। পুলিশের ভূমিকায় আমরা হতাশ।
প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর দুপুরে কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় নিতাই রবিদাস (৩০)। পরদিন সকালে ফতেপুর-চকগৌরী সড়কের পাশে ড্রেনে তার মরদেহ পাওয়া যায়। মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ ধারণা করে, দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে। নিহত নিতাই ওয়ার্ল্ড ভিশন ধামইরহাট এপি কার্যালয়ে ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাবা বিনয় রবিদাস বাদী হয়ে ধামইরহাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে এখনো কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের।


