গাজা শহরের দক্ষিণ জেইতুন এলাকা থেকে হাজার হাজার বাসিন্দা পালিয়ে গেছে, যেখানে কয়েকদিন ধরে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের ফলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা সিটি পৌরসভা এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার কমপক্ষে ৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আবার সাহায্য সংস্থাগুলিকে গাজায় তাঁবু ও আশ্রয় সরবরাহ করতে অনুমতি দেবে। একই সঙ্গে তারা গাজা শহর থেকে দশ লক্ষ মানুষকে দক্ষিণের শিবিরে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করছে।
গাজা শহর দখলের সরকারের পরিকল্পনার প্রতিবাদে ইসরায়েলে একদিনের দেশব্যাপী ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়েছে। জিম্মিদের পরিবার ও অন্যান্যরা যুদ্ধের বিস্তার বন্ধের দাবি তুলেছেন। জাতিসংঘও এই পরিস্থিতি নিন্দা জানিয়েছে।
গাজা সিটির পৌরসভার একজন মুখপাত্র জানান, ছয় দিনের নিরলস বিমান হামলা, গোলাবর্ষণ ও ধ্বংসযজ্ঞের ফলে জেইতুন এলাকায় ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে। প্রায় ৫০,০০০ লোক বাস করেন সেখানে, যাদের বেশিরভাগেরই খাবার ও পানির কম বা কোনও ব্যবস্থা নেই।
৪০ বছর বয়সী ঘাসান কাশকো বলেন, “বিস্ফোরণ থামছে না। আমরা ঘুমের স্বাদ জানি না। আমরা আশ্রয় নিতে একটি স্কুলে এসেছি।” হামাসও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে ইসরায়েলি বাহিনী ধারাবাহিকভাবে জেইতুনে আক্রমণ চালাচ্ছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজা শহর দখল করতে চান এবং সময়সূচী এখনও নিশ্চিত হয়নি। পৌরসভার মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজা শহরের ৮০% অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ওষুধের ঘাটতির কারণে হাসপাতালগুলো মাত্র ২০% ক্ষমতায় পরিচালিত হচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। খাদ্য ও চিকিৎসা ঘাটতির কারণে অপুষ্টিতে কমপক্ষে ২৫১ জন মারা গেছেন, যার মধ্যে ১০৮ জন শিশু। আন্তর্জাতিক সংস্থা সতর্ক করেছে যে গাজায় অনাহারের “সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি” সৃষ্টি হয়েছে।
ইসরায়েলে, গাজায় জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ হয়েছে। প্রধান সড়ক বন্ধ এবং ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর শুরু হওয়া এই যুদ্ধে প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি আক্রমণে ৬১,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি


