শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে নাজমুল হক:
জমিদারির মূল্য ১৩ টাকা ১০ আনা। আশ্চর্য হলেও সত্য । তখন ইংরেজ আমল। ১৮৪২ সাল। শাহজাদপুর অঞ্চলের জমিদারি নিলামে উঠেছে। সেই নিলামের ক্রেতা ছিলেল জমিদার দ্বারকানাথ ঠাকুর । তিনি ছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা।
দ্বারকানাথ ঠাকুর সে সময় ১৩ টাকা ১০আনা দিয়ে শাহজাদপুর অঞ্চলের জমিদারি কিনে নেন ইঙরেজদের কাছ থেকে। শাহজাদপুরে ইংরেজদের একটি নীলকুঠি ছিল। এটাও নিলামের মধে ছিল। এ নীলকুঠিতে বসেই দ্বারকানাথ ঠাকুর জমিদার বংশের জমিদারি কার্যক্রম শুরু হয় ।
শাহজাদপুর ছাড়াও কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, নওগাঁ’র পতিসর ছিল তাঁদের জমিদারি শাসনের দপ্তর । জমিদার দ্বারকানাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পর, রবি ঠাকুরের পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি দেখাশোনার করেন। পিতার অবর্তমানে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি কার্যক্রম দেখভালে করেন। এ জন্য তিনি শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বসবাস করেন।
শাহজাদপুর অঞ্চলের জমিদারি দেখাশোনার জন্য রবি ঠাকুর ১৮৯০ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত মাঝে মাঝে শাহজাদপুর কাছাড়িবাড়িতে অবস্থান করতেন। এ বাড়িতে অবস্থানকালীন রবি ঠাকুর রচনা করেন- “সোনার তরী, গীতাঞ্জলি, চিত্রা, চৈতালি, বিসর্জন, দুই পাখি, ইছামতি, ছুটি, পোস্ট মাস্টার, আকাশের চাঁদ সহ অনেক সাহিত্য কর্ম ।”
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন জমিদার বংশের ছেলে। জমিদারি দেখাশোনার জন্যই কবি সাতটি বছর আসা যাওয়ার করেছেন শাহজাদপুর । আজ কবি নেই। নেই তাঁদের জমিদারি । শুধু কালের সাক্ষী হয়ে আছে রবীন্দ্র কাছাড়ি বাড়িটি। এটি এখন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের জাদুঘর। দোতলা বিশিষ্ট এ জাদুঘরে সংরক্ষণ করা আছে কবির ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র- খাট, চেয়ার টেবিল, হারিকেন, পালকি, ছোফাসেট ইত্যাদি । ছুটির দিন ব্যতীত, প্রতিদিন সকাল ১০ টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা।
প্রবেশ মূল্য পরিশোধ করলে কেবল প্রবেশের সুযোগ মিলে বিশ্ব কবির স্মৃতি বিজড়িত এ জাদুঘরে।


