বাংলাদেশ ও নেপালের পর এবার জেন-জি ঝড় আছড়ে পড়েছে ভারতে। সাংবিধানিক সুরক্ষা ও রাজ্য মর্যাদার দাবিতে লাদাখে শুরু হওয়া আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অনেকে। বিক্ষুব্ধরা অগ্নিসংযোগ করেছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির আঞ্চলিক কার্যালয়ে।
শান্তিপূর্ণ থেকে সহিংসতায়
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) লাদাখ এপেক্স বডির নেতৃত্বে টানা অনশনের ১৫তম দিনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অনশনকারীদের অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পর আন্দোলনকারীরা লকডাউনের ডাক দেন। পরবর্তীতে তরুণরা সরকারি ভবন ও বিজেপি কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ পিআর পদ্ধতি সংবিধানে নেই, আইন বদলানো আমাদের কাজ নয়: সিইসি
সংঘর্ষে চারজন প্রাণ হারান, বহু মানুষ আহত হন। পুলিশেরও কমপক্ষে ৩০ জন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশ দাবি করছে, আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে বাধ্য হয় তারা।
“এটা এক জেন-জি বিপ্লব”
প্রখ্যাত শিক্ষক ও আন্দোলনের প্রবীণ মুখপাত্র সোনাম ওয়াংচুক বলেছেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কার্যকর না হওয়ায় তরুণরা বিস্ফোরিত হয়েছে। তার ভাষায়, “এটা এক ধরনের জেন-জি বিপ্লব।”
তবে মোদি সরকার অভিযোগ করছে, ওয়াংচুক তরুণদের উসকে দিয়েছেন এবং নেপালের সাম্প্রতিক জেন-জি আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা টেনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।
দাবিগুলো কী?
২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তর করে ভারত সরকার। এতে স্থানীয়দের গণতান্ত্রিক অধিকার সংকুচিত হয়।
- লাদাখের ৯০ শতাংশ মানুষ তফসিলি জনজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত, তাই তারা সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল অনুযায়ী সাংবিধানিক সুরক্ষা ও স্বায়ত্তশাসন দাবি করছেন।
- কর্মসংস্থান সংকট ও স্থানীয়দের চাকরির সুযোগ হারানো তরুণদের ক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে।
কৌশলগত গুরুত্ব
লাদাখ ভারতের হিমালয় সীমান্তে অবস্থিত, চীনের সঙ্গে সরাসরি সীমান্ত রয়েছে। অঞ্চলটিতে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি ও গিরিপথ থাকায় এটি কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত সংবেদনশীল। ২০২০ সালে এখানেই ভারত-চীন সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিদ্দিক ওয়াহিদ মন্তব্য করেছেন, “২০১৯ সালে মোদি সরকারের পদক্ষেপ এখন বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে। আগে কাশ্মির ছিল অশান্তির কেন্দ্র, এখন লাদাখও যোগ হলো।”


