মাথাব্যথা—এমন একটি সমস্যা, যা জীবনের কোনো না কোনো সময় প্রায় সবাই অনুভব করেন। অনেকেই ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে সাময়িকভাবে আরাম পান, কিন্তু এর প্রকৃত কারণ খুঁজে দেখেন না। অথচ মাথাব্যথার ধরন জানলে বোঝা যায় শরীরে কোনো লুকানো সমস্যা বা রোগের ইঙ্গিত মিলছে কি না।
চলুন দেখে নেওয়া যাক, মাথার কোন দিকের ব্যথা কোন সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত-
মাইগ্রেন (আধ-কপালি ব্যথা)- মাথার একপাশ থেকে শুরু হয় তীব্র দপদপে ব্যথা, যা ধীরে ধীরে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় চোখের চারপাশেও ব্যথা হয়। দীর্ঘ সময় আলো, শব্দ বা মানসিক চাপ এই ব্যথা বাড়ায়।
টেনশন হেডেক (মানসিক চাপজনিত ব্যথা)- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ থেকে এই ব্যথা হয়। পুরো মাথা ভারী লাগে, যেন কেউ মাথা চেপে ধরেছে। ঘাড়, কাঁধ ও কপালে টানও অনুভূত হতে পারে।
ক্লাস্টার হেডেক (মৌসুমি ব্যথা)- নির্দিষ্ট সময় বা মৌসুমে দেখা দেয় এই ব্যথা। সাধারণত চোখের পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার একপাশে তীব্র যন্ত্রণা হয়। ব্যথার সময় চোখ লাল হয়ে যাওয়া ও পানি পড়া সাধারণ বিষয়।
মস্তিষ্কে রক্তপাত (ব্রেন হেমোরেজ)- যদি মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে ঘাড় পর্যন্ত অসহনীয় ব্যথা হয়, তবে এটি ব্রেনের ভেতরে রক্তপাতের লক্ষণ হতে পারে। এমন অবস্থায় দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
ব্রেন ইনফেকশন (সংক্রমণজনিত ব্যথা)- সংক্রমণের কারণে পুরো মাথা জুড়ে ব্যথা, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, জ্বর ও বমি হতে পারে। মেনিনজাইটিস বা এনসেফালাইটিসের মতো রোগে এই লক্ষণ দেখা দেয়।
চোখের পাওয়ার পরিবর্তন- চোখের চারপাশে ব্যথা ও মাথায় টান অনুভূত হয়। দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা বা চোখের পাওয়ার বেড়ে গেলে এই সমস্যা বাড়ে। চোখ পরীক্ষা করিয়ে নিন এবং নিয়মিত বিরতি দিন চোখকে।
ব্রেন টিউমার- মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে (বিশেষ করে টেম্পোরাল লোব বা একপাশে) টিউমার থাকলে সেই দিকেই মাথাব্যথা হয়। টিউমার বড় হলে ব্যথা তীব্র হয়, সঙ্গে ঝাপসা দেখা, ভারসাম্য হারানো বা বমি হতে পারে।
সতর্ক থাকুন
নিয়মিত বা তীব্র মাথাব্যথা কখনোই অবহেলা করবেন না।
বারবার ব্যথা হলে বা চোখে ঝাপসা দেখা, মাথা ঘোরা, বমি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


