সাগর মিয়া, রংপুরঃ
রংপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের প্রভাবে জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা কয়েকদিন ধরে উত্তরের হিমেল বাতাসের সঙ্গে ঘন কুয়াশা জেঁকে বসায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ভোররাত থেকে সকাল গড়ালেও কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি থাকছে যে গ্রামাঞ্চল ও সড়কপথ দীর্ঘ সময় অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে। সূর্যের দেখা মিলছে না, ফলে দিনের বেলাতেও যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা নেমে এসেছে ৫০ মিটারের নিচে, যা সড়কপথে চলাচলকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
তীব্র শীতের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল, দিনমজুর, জেলে ও খেটে খাওয়া মানুষ। অনেককে খোলা আকাশের নিচে কিংবা রাস্তার পাশে খড়কুটো ও কাঠ জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। শীতের কারণে কাজে যেতে না পারায় তাদের আয়ের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশার কারণে তারা স্বাভাবিকভাবে কাজে বের হতে পারছেন না। পেটের দায়ে বাড়ি থেকে বের হলেও অনেক গেরস্থ বাড়িতে কাজের ডাক মিলছে না। ফলে চরম কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে।
একই অভিযোগ দোকানদারদেরও। তারা জানান, যেখানে আগে সকাল ৭–৮টার মধ্যেই দোকান খুলতেন, সেখানে এখন কুয়াশা ও শীতের কারণে দুপুর ১১–১২টার আগে দোকান খোলা সম্ভব হচ্ছে না। ক্রেতার উপস্থিতিও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
এদিকে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীর চাপও বাড়ছে।
আবহাওয়া সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন রংপুর অঞ্চলে শীত ও কুয়াশার এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। এমন অবস্থায় শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দ্রুত ত্রাণ ও শীতবস্ত্র বিতরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।


