দেশের বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে এবং আধুনিকায়নের ধারাকে আরও গতিশীল করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতালির কাছ থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ইউরোফাইটার টাইফুন এবং তুরস্কের কাছ থেকে টি-১২৯ অ্যাটাক হেলিকপ্টার কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ইতালি থেকে ১০টি ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টি-রোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট ইউরোফাইটার টাইফুন এবং তুরস্ক থেকে ৬টি টি-১২৯ অ্যাটাক হেলিকপ্টার সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতালি ও তুরস্ক সরকারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে চুক্তিপত্র চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এই প্রক্রিয়া তদারকিতে একজন এয়ার ভাইস মার্শালের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হবে। এতে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বিমান সদরসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি থাকবেন। চলতি মাসের ২০ তারিখের মধ্যে প্রত্যেক সংস্থাকে প্রতিনিধি মনোনয়ন দিতে বলা হয়েছে।
যৌথ কমিটি খসড়া চুক্তি পর্যালোচনা, দর-কষাকষি, মূল্য নির্ধারণ, অর্থপরিশোধ পদ্ধতি এবং প্রশিক্ষণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো চূড়ান্ত করবে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সরকার-টু-সরকার (G2G) ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে।
এর আগে চীনের কাছ থেকে ২০টি জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার আলোচনা হয়েছে, যার প্রস্তাবিত মূল্য প্রায় ২২০ কোটি মার্কিন ডলার। পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে ১৬টি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান সংগ্রহের পরিকল্পনাও রয়েছে, যার জন্য ধরা হয়েছে প্রায় ৭২০ মিলিয়ন ডলার বাজেট।
কর্মকর্তারা বলছেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, বিশেষ করে চীন-ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তের উত্তেজনা বিবেচনায় বিমানবাহিনীর আধুনিকীকরণ এখন সময়ের দাবি। সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোই এখন সরকারের অগ্রাধিকার।
ইউরোফাইটার টাইফুন বিশ্বের অন্যতম উন্নত যুদ্ধবিমান। যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি ও স্পেনের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এ ফাইটার জেট একাধিক ভূমিকায় ব্যবহৃত হয়—আকাশযুদ্ধ, স্থল আক্রমণ, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ারসহ। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২,৪৯৫ কিলোমিটার গতি এবং ৫৫ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়তে সক্ষম এই যুদ্ধবিমানটির রয়েছে স্টেলথ সুবিধা ও আধুনিক রাডার ব্যবস্থা, যা এটিকে বিশ্বের অন্যতম মারাত্মক কমব্যাট এয়ারক্রাফটে পরিণত করেছে।


